ছোট থেকে সকলেই মা বাবার মুখে শুনে আসে ভালো করে পড়াশোনা কর নাহলে বড় হয়ে ভালো কাজ হবে না। আর ভালো কাজ না পেলে ঠিকমত জীবনযাপন করা যাবে না। মা বাবার পরামর্শ মত অনেকেই নিজেদের পড়াশোনা যথেষ্ট মন দিয়ে করে। আর শেষে ভালোভাবে পাশও করে, কিন্তু তারপর? বর্তমানে যে পড়াশোনা করেও দাম নেই! পড়াশোনা করেও যখন কাজের আকাল শেষমেশ চায়ের দোকান (Tea Shop) খোলের সিদ্ধান্ত নিল টুকটুকি।
কে এই টুকটুকি? কতটা পড়াশোনা করেছে? কেনই বা তাকে খুলতে হল চায়ের দোকান? এমন হাজারো প্রশ্ন অনেকের মাথাতেই আসছে। তবে প্রশ্নের উত্তর খুবই বাস্তব সম্মত। আজ টুকটুকির ‘MA English Chaiwali’ চায়ের দোকানের কথাই বলব আপনাদের। গতসোমবার থেকে হাবড়া স্টেশনের প্লাটফর্মে চালু হয়েছে এই চায়ের দোকান। যার মালিক ২৬ বছরের যুবতী টুকটুকি দাস।
জানা যাচ্ছে, রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে ৬১% নম্বর নিয়ে স্নাতকত্তোর পড়াশোনা শেষ করেছে টুকটুকি। পড়াশোনা শেষে একাধিকবার চাকরির পরীক্ষাও দিয়েছে সে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি! চাকরি তো দূর, জীবন কাটানো দুর্বিসহ হয়ে উঠছে প্রতিদিন। বাবা প্রশান্ত দাস সামান্য মুদিখানার দোকান চালান, এমনকি সংসারের দায়ে মাঝে মধ্যে ভ্যান রিক্সায় চালাতে হয় তাকে। তখন মা দোকান সামলান।
এভাবেই শিক্ষিত হয়েও যখন চাকরি না পেয়ে হতাশায় দিন কাটছিল টুকটুকির তখনই একটা আশার আলো পায় সে। সোশ্যাল মিডিয়া মারফত জানতে পারে মুম্বাইতে এক শিক্ষিত অথচ বেকার যুবক চায়ের দোকান খুলেছে। আর দোকানের নাম দিয়েছে নিজের শিক্ষার ডিগ্রি জুড়েই। এই দেখে সেও ঠিক করে চায়ের দোকান খুলবে। তবে ভাবনা আর কাজ শুরুতে পথে অনেক সমস্যা এসেছে।
একজন মেয়ে হয়ে দোকান সামলাবে এই কারণে প্রথমে দোকান পাওয়াই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে নিজের জেদে ঠিকই দোকান খুঁজে পায় টুকটুকি। এরপর শুরু হল চায়ের দোকান, নাম ‘MA English Chaiwali’। দোকানে ৫টাকা থেকে শুরু হয়ে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের চা পাওয়া যাচ্ছে। সাথে মিলছে গরম গরম সিঙ্গাড়াও। টুকটুকির মতে, ‘আমার মতে, কোনও কাজী ছোট নয়। চায়ের দোকান দিয়েই নিজের ব্র্যান্ড তৈরী করার ইচ্ছা আছে’।