গোটা দেশের যুগপুরুষ নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু (Netaji Subhas chandra Bose), প্রতি বছর ২৩ শে জানুয়ারি তাঁকে স্যালুট ঠুকে তেরঙ্গা ওড়ান দেশবাসী। কিন্তু ১৯৪৫ সালের পর হঠাৎই গুম হয়ে যান নেতাজি, তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তাঁর। নেতাজির এই অন্তর্ধান আজও গোটা দেশের কাছেই রহস্য। এই নিয়ে রয়েছে হাজারো জল্পনাও। কখনও বলা হয় জাপানে বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল, আবার মনে করা হয় উত্তরপ্রদেশে এক সাধুর বেশে হাজির হন নেতাজি, যেখানে তাঁর নাম হয়েছিল ‘গুমনামী বাবা’।
গোটা দেশের কাছেই সুভাষ চন্দ্র এক আবেগের নাম। এমন সেন্সিটিভ বিষয় নিয়েই সিনেমা করার সাহস দেখিয়েছিলেন টলি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherjee)। তাঁর ছবি ‘গুমনামী’তে নেতাজির ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করে প্রভূত প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি (Prosenjit Chatterjee) । তবে এই ছবি ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানান বিতর্ক, প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত পেয়েছিলেন পরিচালক, জড়িয়েছিলেন আইনি সমস্যাতেও।
তবে এবার যেন সব পরিশ্রম সার্থক হল গুমনামী ছবির কলাকুশলীদের৷ ৬৭ তম জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে সেরা বাংলা ছবি হিসেবে ‘রজত কমল সম্মান’ এবং সেরা অভিযোজিত চিত্রনাট্য- এর সম্মান পেল গুমনামি। এ এক ভারী গর্বের দিন, বাংলা সিনেমা তথা গোটা বাঙালিদের কাছেই।
পুরস্কার হাতে পেয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গুমনামী’র জন্য যে কোনও পুরস্কারই আমার কাছে বিশেষ পাওনা। এই একটি ছবির জন্য প্রচুর যুদ্ধ করতে হয়েছে। মেরে ফেলার হুমকিও শুনেছি। সেই ছবি জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে। সবার পরিশ্রমের সঠিক মূল্যায়ন হল।’’
যদিও এই ছবির জন্য পুরস্কার নিজের ঝুলিতে পরিচালক ভরে নিয়েছিলেন ২০১৯ সালেই। কিন্তু অতিমারীর কারণে জয়ের স্বাদ খানিক দেরীতে মিলল। অবশেষে সোমবার ৬৭তম জাতীয় পুরস্কার হাতে পেলেন পুরস্কৃত অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালকেরা। সৃজিতের ছবি ‘গুমনামী’ বাদেও এবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে কৌশিক গাঙ্গুলির ছবি ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’, এই ছবিতেও মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।