ভারতীয় টেলিভিশনের জনপ্রিয় গেম শো ‘কৌন বানেগা ক্রোড়পতি ‘ অর্থাৎ কেবিসি (KBC)। বলিউডের বিগবি অমিতাভ বচ্চনের (Amitabh Bachchan) সঞ্চালিত এই শো – এর জনপ্রিয়তা সারা বিশ্ব জুড়েই। মেধা আর সাধারণ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিলেই এই শো-য়ের প্রতিযোগীরা ঘরে তুলতে পারেন কোটি টাকাও। আসতে চলেছে ‘কেবিসি ১৩’ ঘোষণামতোই আজ ২৩ অগস্ট থেকে সোনি টিভিতে সম্প্রচার শুরু হবে কেবিসির। সপ্তাহে পাঁচ দিন অর্থাৎ সোমবার থেকে শুক্রবার রাত ৯ টায় সম্প্রচার হবে এই শো।
এই শো শুরুর আগেই হঠাৎ উঠে এলো কেবিসির ইতিহাসের এক দুর্লভ গল্প। সালটা ২০০৫, কেবিসির পঞ্চম সিজনে বিজেতা হয়ে ৫ কোটি টাকা জিতে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন চম্পারণের সুশীল কুমার। সাধারণ ভাবে দেখতে গেলে কোনো মধ্যবিত্ত পরিবারে ৫ কোটি টাকা পাওয়া যেন সৌভাগ্য। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার এই যে এই টাকা তার ঘরে খুশি আনার বদলে আরও তছনছ করে দিয়েছে তার জীবন।
সেই চ্যালেঞ্জের কথাই গত বছর এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন সুশীল। তিনি জানান, বিপুল পরিমাণের অর্থ একবারে পেয়ে তার সঠিক ব্যবহার করতে পারেননি সুশীল। অর্থের অভাব ঘুচতেই মদ, সিগারেট সহ অন্যান্য নেশায় বুঁদ হয়ে যান সুশীল। প্রতারক বন্ধুরা তার থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকী তার এই লাইফস্টাইলের জন্য স্ত্রীয়ের সঙ্গে সম্পর্কেও পারা পতন ঘটে।
তিনি জানান সর্বোপরি তার জীবনটা ছারখার হয়ে যায়। ‘আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় শুরু হয় যখন আমি কেবিসি জিতি’, এই শিরোনামে ফেসবুকে এক খোলা চিঠি লিখেছিলেন সুশীল। তিনি জানান জেতার পর প্রথম কদিন এই অনুষ্ঠান, সেই অনুষ্ঠানেই কেটে যায়। এরপর বেশ কিছু ব্যবসাতেও বিনিয়োগ করেন তিনি, সমাজকর্মী হিসেবেও কাজ শুরু করেছিলেন, কিন্তু সমস্তকিছুকেই ছাপিয়ে যায় তার নেশা।
তাই সত্যি বলতে মানুষের জীবনে অর্থ দরকার একথা ঠিক, কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অর্থ মানুষকে সুখ নয় বরং যন্ত্রণাই এনে দেয়। তাই কেবিসির ৫ কোটির বিজেতা আরও লিখেছিলেন, ‘নিজেকে খুঁজে পেতে হলে মানুষকে সেটাই করতে হয় যা তোমার হৃদয় বলে, যদিও নিজের ইগোকে কোনওদিনই সন্তুষ্ট করা যায় না। সফল এবং জনপ্রিয় মানুষ হওয়ার চেয়ে ভালো মানুষ হওয়াটা বেশি দামি’।