তখন সদ্য হানা দিয়েছে মারণ ভাইরাস করোনা। তার ভয়ে কাঁটা তখন গোটা দেশ। রাজ্য জুড়ে তখন পালন হচ্ছে লকডাউন (lockdown) ,জারি হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। তখন বাড়ি থেকে এক পা বাইরে বেড়োলেও কোমরে পড়ছিল পুলিশের লাঠি, কেননা তখন সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত আরও কয়েকগুণ বেশি। আর ঠিক সেই সময়েই ভাইরাল হয়েছিল এক ‘চা-কাকু’। তার সেই বিখ্যাত লাইন আজও মুখে মুখে ফেরে, ‘আমরা কি চা খাবনা? খাব না আমরা চা?’
নির্ভেজাল সাধারণ এই প্রশ্নটি বুঝিয়ে দিয়েছিল খেটে খাওয়া মানুষের কাছে ‘চা’ ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পরে তার বিষয়ে জানা যায়, তার নাম মৃদুল দেব (mridul deb)। পেশায় মাটি কাটার কাজ করতেন তিনি। কিন্তু সেই ভাইরাল একটি ভিডিও রাতারাতি ‘কিসমত’ বদলে দিয়েছিল তার।
ধীরে ধীরে প্রচারের আলো পেয়ে দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে জুটে যাচ্ছিল সকলের ভালোবাসায় কিছুনা কিছু সাহায্য। দক্ষিণ কলকাতার কলোনির বাসীন্দা মৃদুল দেবের অভাব ঘোচাতে তৎপর হয়েছিলেন সাংসদ মিমি চক্রবর্তীও। তবে এই চা-ই মৃদুল বাবুর ‘লক্ষ্মী’।
দিন কয়েক আগেই চায়ের দোকান খুলেছিলেন চা-কাকু। কিন্তু ভারি মুশকিলে পড়েছেন তিনি। কারণ তিনিও যে চা-লাভার। এতদিন তাও চা খাওয়ার উপর কন্ট্রোল ছিল। কিন্তু এখন হাতের কাছে তার এক ফ্ল্যাক্স ভর্তি চা। তাই চা-য়ের নেশা একেবারে জেঁকে বসেছে চা কাকুর। নিজের চা নিজেই খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছেন তিনি, আর তার জেরে ব্যবসায় হচ্ছে বিশাল লোকসান।
আগে তার ভাইরাল বাণী ছিল, “আমরা কি চা খাব না? খাব না কি আমরা চা?” আর এখন সেই চা-কাকুই এখন ভয়ে ভয়ে বলছেন “না, না বাবা। আর চা খাব না।” কারণ চা-য়ের উপর লোভের জেরে তার লাভ যে কমতে বসেছে। যাদবপুর অঞ্চলে এই দোকানের নাম রাখা হয়েছে, চা কাকুর দোকান।