উত্তম কুমার (Uttam Kumar) মানেই প্রাণ জুড়ানো হাসি, কপালে এসে পড়া অবাধ্য চুল। বাঙালির স্টাইল স্টেটমেন্টের (Style Statement) শেষ কথা তিনিই। মৃত্যুর ৪০ বছর পরেও সময় যেন তাঁর সাথেই হাত ধরাধরি করে চলে। স্টারডম(Stardom) বজায় রাখতে তিনি যেমন জনগণের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতেন, আবার তিনিই টিভির পর্দায় হয়ে উঠতেন একেবারে পাশের বাড়ির ছেলে। এমনই তার ক্যারিশ্মা। সেইসাথে অনবদ্য রোম্যান্টিক ইমেজ , মৃত্যুর এত বছর পরেও যার প্রভাব কমেনি ছিটেফোঁটাও। তাঁকে নিয়ে লিখতে বসলে আমজনতা থেকে জনপ্রিয় তারকা কথা শেষ হয় না কারও।
উত্তম কুমারের সাথে অভিনয় করা তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুদর্শন অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় (Subhendu Chatterjee) । ব্যক্তিগত জীবনে তাঁরা একে অপরকে দাদা-ভাইয়ের মতোই স্নেহ করতেন। সেই কারণেই সিনেমার পর্দাতেও ফুটে উঠত সেই রসায়ন। এরফলে একটা সময় দর্শকরাও ভাবতে শুরু করেছিলেন উত্তম কুমারের সাথে সত্যিই বোধহয় শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের কোনো সম্পর্ক আছে। আবার অনেকে ভাবতেন উত্তম কুমার শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের সত্যিকারের দাদা।
এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু পুত্র তথা অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় (Saswata Chatterjee) একবার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন উত্তমকুমার শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ‘বড় দাদা’। তাঁর আরাধ্য দেবতা। তাই মহানায়কের প্রয়াণের পর ১৯৮১-র ২৪ জুলাই থেকে শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে শুরু হয় উত্তম-পুজো। এমনকি শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পরেও গত ৪০ বছরে বাবার চালু করা সেই রেওয়াজ বজায় রেখেছেন তাঁর ছেলে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ও।
আসলে সাদা পদ্ম ছিল মহানায়কের ভীষণ প্রিয়। সেকথা অজানা ছিল না ভ্রাতৃসম শুভেন্দুর। তাই ২৪ জুলাইয়ের দিনটিতে ‘দাদা’ উত্তমকুমারের স্মরণে বেশ কিছু সাদা পদ্ম আনাতেন তিনি। এরপর নিজের হাতে সেগুলো খুলে সাজিয়ে দিতেন মহানায়কের ছবির নীচে। সাথে রাখতেন এক পেগ হুইস্কি ।
বাবা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের মতোই উত্তম পাগল ছেলে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ও। তাই ২৪ জুলাই মহানায়কের প্রয়াণ দিবসে উত্তম কুমারের স্মরণে তাঁর একটি ছবি করে শাশ্বত লিখেছিলেন ‘১৯৮০ সালে আজকের দিনে অভিনয় ছেড়েছিলেন তিনি।কিন্তু সকলের মধ্যে আজও তিনি বিরাজমান। তিনিই একমাত্র মহানায়ক।’