বাংলার বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস দেবদাস (Devdas) এক অমর প্রেমগাঁথা। কথিত আছে গলা পর্যন্ত মদ্যপান করেই নাকি এই উপন্যাস রচনা করেছিলেন তিনি। পারোর জন্য গল্পের নায়ক দেবদাসের বিরহকে উপজীব্য করে ভারতের বুকে কম করে প্রায় ১৯ টি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। কিন্তু সেই সবগুলির মধ্যে সর্বকালের সেরা হিসেবে ধরা হয় ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সঞ্জয়লীলা বনসালীর পরিচালনায় শাহরুখ খান (Shah Rukh khan), ঐশ্বর্য রাই এবং মাধুরী দীক্ষিত অভিনীত দেবদাস।
১৯ বছর কেটে গেল এই ছবি মুক্তির, তবুও আজও এর জনপ্রিয়তা বিন্দু মাত্র কমেনি। শাহরুখ অভিনীত দেবদাস টিভিতে চললে আজও চোখ ফেরাতে পারেনা ৮ থেকে ৮০। আসলে এই সিনেমা তৈরি করতে প্রাণ ঢেলে দিয়েছিলেন পরিচালক, নির্মাতা থেকে ছবির কলাকুশলীরা। আজ জেনে নিন এই ছবির ক্যামেরার পিছনের বেশ কিছু অজানা তথ্য।
- বিগ বাজেটের এই ছবির সেটের জন্যই খরচ হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। বিশেষত, চন্দ্রমুখী অর্থাৎ মাধুরীর কোঠা বানাতেই শুধু খরচ করা হয়েছিল ১২ কোটি টাকা। এই সেটটি দেবদাসের শ্যুটিং চলাকালীন প্রায় ৯ মাস ব্যবহার করা হয়েছিল।
- পারোর ঘর তৈরির জন্য খরচ করা হয়েছিল ৩ কোটি টাকার বেশি। পারোর ঘর তৈরিতে প্রায় দেড় লক্ষ কাঁচের গ্লাসের ভাঙা টুকরো ব্যবহার করা হয়েছিল।
- সবচেয়ে চোখ ধাঁধানো বিষয় ছিল এই ছবির সাজসজ্জা। ডিরেক্টর সঞ্জয়লীলা বানসালি আর ডিজাইনার নীতা লুল্লা মিলে কলকাতা থেকে ৬০০ টি শাড়ি কিনে আনেন। এই শাড়িগুলো পরে একে অপরের সাথে জুড়েই ক্রিয়েট করা হয় ছবিতে পারো অর্থাৎ ঐশ্বর্য রাইয়ের লুক।
- দেবদাসের কথা বললেই মনে পড়ে জনপ্রিয় গান ‘ডোলা রে ডোলা’র কথা। সেই গানে একসাথে নেচেছিলেন অভিনেত্রী মাধুরী এবং ঐশ্বর্য। এই নাচের শ্যুটিং -এর সময় ভারী কানের দুলে কেটে ঐশ্বর্যর কান দিয়ে বেরিয়ে এসেছিল।
- দেবদাস সিনেমার গান “কাহে ছেড়ে মোহে” তে নাচের সময় মাধুরী দীক্ষিত যেই পোশাকটি পরেছিলেন তার ওজন ৩০ কেজি ছিল, দাম ছিল ১৫ লাখ টাকা।
- শ্যুটিং চলাকালীন সেটে ৪২ টি জেনেরটর ও ৭০০ জন লাইটম্যান থাকতেন। তাদের সহায়তায় সেটে ৩০ লাখ ভোল্টের বিদ্যুৎ পরিবহন করা হতো।
- ১৯৫৫ সালে বিমল রায় পরিচালিত ‘দেবদাস’-এ মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার। ২০০২-এ তাঁরই ‘পাতানো ছেলে’ শাহরুখ একই চরিত্রে অভিনয় করে। সবাই তাই মুখিয়ে ছিলেন তাঁর অভিনয় দেখার জন্য। পাশাপাশি, এই ছবিতে প্রথম আত্মপ্রকাশ শ্রেয়া ঘোষালের।