পান্তা ভাতের নাম শুনলেই নাক সিঁটকোন অনেকে। কিন্তু বাঙালিদের কাছে পান্তা ভাত মানেই আলাদা একটা ইমোশন।যে একবার খেয়েছে সেই মজেছে এর নেশায়। আর এই পান্তা ভাতই এবার দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের দরবারে ভোজনরসিক বাঙালীর মুকুটে এনে দিল নতুন শিরোপা। দীর্ঘ তিন মাস ধরে চলতে থাকা রান্নাবিষয়ক রিয়েলিটি শো মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার (Master Chef Australia)সিজন ১৩ ফাইনাল রাউন্ডে পান্তা ভাতের রেসিপি (smoke rice water) শিখিয়ে বিচারকদের মন জয় করলেন ৩৮ বছর বয়সী বাঙালি তরুণী কিশোয়ার চৌধুরী।
জনপ্রিয় এই রিয়ালিটি শো তে ফাইনাল ডিশ হিসাবে বাঙালির চির পরিচিত পান্তা-ভাত, আলু ভর্তা আর সার্ডিন মাছ ভাজা রান্না করে ১১৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রানারআপ অর্থাৎ তৃতীয় স্থান দখল করেছেন এই বঙ্গ তনয়া ।রান্নায় বাজিমাত করার পাশাপাশি দুই সন্তানের মা কিশোয়ার একজন সফল বিজনেস ডেভেলপার।পারিবারিক প্রিন্টিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন তিনি।এই তিন মাসের বিশাল জার্নিতে তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর চার বছর বয়সী শিশুকন্যা সেরাফিনা , বারো বছর বয়সী পুত্র মিকাইল এবং জীবনসঙ্গী এহতেশাম নেওয়াজ সহ পরিবারের অনান্য সদস্যরা। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়ার মেলবার্নে।
সংবাদমাধ্যমে কিশোয়ার জানিয়েছেন তাঁর বাবার বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরের আর মা পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের বাসিন্দা। তাঁরা দুজনে প্রায় ৫০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় চলে এসেছিলেন।কিন্তু বাড়ির পরিবেশ ছিল বাঙালিয়ানায় ভরপুর।আর বাবা মায়ের কাছ থেকে পাওয়া বাঙালি সংস্কৃতিকে ছোটো থেকেই নিজের ভেতরে গেঁথে নিয়েছিলেন কিশোয়ার।
তাই আন্তর্জাতিক এই রান্নার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেও শুরু থেকেই কখনও ‘লাউ চিংড়ি’, ‘মাছের ঝোল’, কখনও ‘আলু ভর্তা’, কখনও আবার ‘খিচুড়ি’ও ‘বেগুন ভর্তা’, কিংবা ‘চিংড়ি ভর্তা’, ‘মাংসের কালাভুনা’, ‘আমের টক’, ‘খাসির রেজালা’, ‘ফুচকা’, ‘চটপটি’র মতো অসংখ্য বাঙালি খাবার রান্না করে নজর কেড়েছেন কিশোয়ার।
View this post on Instagram
উল্লেখ্য এই রান্নার প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ২৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় জাস্টিন নারায়ণ।এছাড়া প্রথম রানারআপ হয়েছেন আরেক প্রতিযোগী পিট ক্যাম্পবেল।প্রসঙ্গত বাঙালি খাবার নিয়ে নিজের দুর্বলতার কথা বলতে গিয়ে নিজের এক বিশেষ সখের কথা জানিয়েছেন কিশোরায় । তিনি জানান বাবা-মায়ের কাছ থেকে বাঙালি পদের রান্না শিখতে শিখতে বাঙালি খাবারের প্রতি বিশেষ অনুরাগ তৈরি হয় ।তাই বাংঙালি রান্না নিয়ে একটি বই লিখতে চান তিনি।