মাত্র কদিন আগেই অর্থাৎ ৭ জুলাই ,বুধবার হিন্দি সিনেমা জগতে অবসান ঘটেছে এক বিরাট অধ্যায়ের। প্রয়াত হয়েছেন বলিউডের কিংবদন্তি বর্ষীয়ান অভিনেতা দিলীপ কুমার(Dilip Kumar)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তাঁর প্রয়াণে ভারতীয় সিনেমা জগতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা এককথায় অপূরণীয়। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন দিলীপ কুমার।তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা বলিউড।সকলেই “ট্রাজেডি কিং”(Tragedy King) -এর প্রয়াণে নিজেদের মতো করে শোক জ্ঞাপন করেছিলেন।সম্প্রতি দিলীপ কুমারের সাথে নিজের স্মৃতি চারণা করেছেন অপর এক প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কাকতালীয়ভাবে মুম্বইয়ের খারে অবস্থিত হিন্দুজা হাসপাতাল যেখানে জীবনের শেষ কটা দিন দিলীপ কুমার চিকিৎসাধীন ছিলেন সেই একই হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ(Naseeruddin Shah)-ও।আর অদ্ভুতভাবে গত ৭ জুলাই যেদিন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ।সেদিনই পরলোক গমন করেন দিলীপ কুমার।
এ প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে নাসিরুদ্দিন শাহ জানিয়েছেন, হিন্দুজা হাসপাতালে তিনি যখন ভর্তি ছিলেন সেসময় একদিন দিলীপ কুমারের স্ত্রী অভিনেত্রী সায়রা বানু (SairaBanu)তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাঁর মাথায় হাত রেখে সায়রা বানু বলেছিলেন, “সাহাব তোমার ব্যাপারে খোঁজ নিতে চেয়েছেন। আমি আশীর্বাদ করি তোমায়।” সেইসাথে অভিনেতার আরও সংযোজন “সায়রা বানুর কথা শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমিও ওঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমি যেদিন এলাম, সেদিন তিনিও চিরকালের জন্য চলে গেলেন।”
এছাড়া দিলীপ কুমারের স্মৃতি চারণা প্রসঙ্গে পুরনো স্মৃতি হাতড়ে , নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে তিনি দিলীপ কুমারকে অভিনয়ের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথা বলেছিলেন। যা শুনে সেসময় দিলীপ কুমার তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, “আমার মনে হয় তোমার ফিরে যাওয়া উচিত এবং পড়াশোনা করা উচিত। ভাল পরিবারের ছেলে মেয়েদের অভিনয় করতে আসা উচিত নয়।”
তবে মজার কথা দিলীপ কুমারের এই পরামর্শ শোনার পর কখনও তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করার সাহস পাননি খোদ নাসিরউদ্দিন শাহও। এমনই শক্তিশালী ছিল তাঁর ব্যাক্তিত্ব।এপ্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, “আমার সেই সাহসই ছিল না। ভারতের অন্যান্য অভিনেতাদের মতো আমিও তাঁকে দেখে খুব ভয় পেতাম। তিনি সবার উপরে ছিলেন। ”
দীর্ঘ অভিনয় জীবনে কেবল ‘কর্মা’ ছবিতে দিলীপ কুমারের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ হয়েছিল নাসিরুদ্দিন শাহের। সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে অভিনেতা জানিয়েছেন, “জীবনে অভিনয় করার সময় তখনই প্রথম নার্ভাস হয়েছি।খুব সকালে ওনাকে শুভেচ্ছা জানানো ছাড়া বেশীরভাগ সময় তাঁর কাছে যেতেই ভয় পেতাম।”