ছোটপর্দার জনপ্রিয় নতুন মুখ ‘দেশের মাটি (Desher Mati)’ সিরিয়ালের অভিনেত্রী শ্রুতি দাস (Shruti Das)। কাটোয়া থেকে কলকাতায় মূলত পড়াশোনা করতেই এসেছিলেন অভিনেত্রী শ্রুতি। সাথে ছিল মডেলিংয়ের স্বপ্ন, আর সেই থেকেই প্রথম অডিশন দেওয়া। এরপর প্রথমে ত্রিনয়নী সিরিয়াল তারপর এখন দেশের মাটিতে নোয়া চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী। কিন্তু একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও গায়ের রং কালো হবার জন্য বারবার নেটিজেনদের নানা ধরণের নোংরা কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হচ্ছে অভিনেত্রীকে।
অভিনয়ে দক্ষতা থাকলেও তাকে শুনতে হয়েছে ‘পেত্নী’, ‘কুতসিৎ’, ‘কাজের লোক’ এর মত শব্দ ব্যবহার করে কটাক্ষ করা হয়েছে অভিনেত্রীকে। শেষমেশ বাধ্য হয়ে অইনেত্রী কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম সেলে অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছেন। এবার অভিনেত্রীর যাওয়র কেউ ধরণের কুরুচিকর আক্রমণের বিরুদ্ধে সরব হলেন সিরিয়াল লেখিকা লীনা গাঙ্গুলি (Leena Ganguly) সহ শ্রীলা মজুমদার (Sreela Majumder) ও অনিন্দিতা সর্বাধিকারীরা (Anindita Sarbadhikari)।
এই প্রসঙ্গে লীনা গাঙ্গুলী জানিয়েছেন, অনেকেই শ্রুতিকে ওর গায়ের রং নিয়ে বাজে মন্তব্য করছে। তার মধ্যে কিছু ওর বাড়ির অঞ্চলের লোকজন তো আছেনই, তবে আরো অনেক লোকেরাও বাজে মন্তব্য করছেন। যারা মন্তব্য করছেন তাদের খোঁজ নিয়ে দেখা গেল কেউ কেউ শিক্ষকতার সাথেও যুক্ত রয়েছেন। তাদের দেখে সত্যি প্রশ্ন তৈরী হয় তাদের মানসিকতা নিয়ে! আজকে দিনেও বর্ণবৈষম্য রয়ে গেছে মানুষের মনে? এই একটা ব্যবস্থা হওয়া দরকার তাই আমরা সাইবার সিরাম সেলে ব্যাপারটা জানিয়েছি।
শ্রীলা মজুমদার বলেন, এটা শুনেই খুব খারাপ লাগছে যে আজকের দিনে দাঁড়িয়েও একটি মেয়েকে এভাবে গায়ের রঙের জন্য হেনস্থা করা হচ্ছে। একসময় আমি যখন অভিনয় শুরু করি তখন অনেকেই আমাকে কালো বলতেন। কিন্তু অভিনয়ের জন্যই প্রশংসাও পেয়েছি। তাই শ্রুতিকেও বলবো অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করে দিতে। আর পুলিশের দারস্ত হবার ব্যাপারে তিনি বলেন যে আমি শ্রুতির পাশে আছি।
একইভাবে পরিচালিকা অনিন্দিতা সর্বাধিকারী জানান, সমাজে গভীরভাবে এই বর্ণবিদ্বেষ ব্যাপারটা ঢুকে গিয়েছে। নাহলে শ্রুতিকে যেমন কালো বলে এভাবে নোংরা আক্রমণের মানসিকতা আসে কোথা থেকে? এখনো বিয়ের জনই অনলাইনে দেখতে গেলেই দেখা যায় পাত্র উজ্জ্বল বর্ণের সুন্দরী পাত্রী খুঁজছে।
আর অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের ক্ষেত্রে তো ব্যাপারটা আরো বাজে, মেয়ে কালো হলে তাকে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দিতে হয়! শ্রুতির নেওয়া পদক্ষেপের সমর্থন করি। সাথে এটাও বলতে চাই যে এই বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সকলকেই এগিয়ে আস্তে হবে প্রতিবাদের জন্য।