বাংলা সিরিয়ালের মধ্যে অনেক সিরিয়াল রয়েছে যেগুলো দেখার জন্য সন্ধ্যে নামলে অপেক্ষায় থাকেন দর্শকেরা। এই সমস্ত সিরিয়ালের মধ্যে একটি সিরিয়াল বিশেষ করে মন কেড়েছে দর্শকদের, সেটি হল দেশের মাটি। নোয়া-কিয়ান দিয়ে শুরু হলেও সিরিয়ালে আরো একটি জুটি রাজা-মাম্পি ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়। আর সেই কারণেই সিরিয়ালের প্রতি দর্শকদের আকর্ষণ দিনদিন বেড়েই চলেছে। লকডাউনের মধ্যে বিনোদনের রসদ খুঁজতে তাই সকলেই হাজির হচ্ছে এই সিরিয়ালটি দেখতে।
এই সিরিয়ালে অভিনয় করছেন তাবড় তাবড় সব অভিনেতা অভিনেত্রীরা। শ্রুতি দাস, দিব্যজ্যোতি দত্ত, রুকমা রায়, রাহুল ব্যানার্জি, ভরত কল, শংকর চক্রবর্তী, রীতা দত্ত চক্রবর্তী, দেবোত্তম মজুমদার, রাহুল ব্যানার্জির মত নতুন পুরোনো সবকালেরই হেভিওয়েট তারকাদের সমাগম এই ধারাবাহিকটি।
নোয়া-কিয়ান ছাড়াও মুখার্জী বাড়িতে মাম্পি ও রাজার মধ্যেকার প্রেমের সম্পর্ক মন ছুঁয়ে গিয়েছে দর্শকদের। বর্তমানে নোয়া-কিয়ানের পাশাপাশিই দেখানো হচ্ছে রাজা-মাম্পির প্রেমকাহিনী। তবে আজ সিরিয়ালের নায়ক নায়িকাদের নিয়ে নয়, কথা বলব এমন একজনের সঙ্গে যার বাস্তব জীবনের পরিচয় শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
দেশের মাটি ধারাবাহিকটিতে “এসিপি সাহেব”র চরিত্রে অভিনয় করছেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। “নোয়া”কে “শিবু” গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচানোর পর বর্তমানে নোয়ার পরিবারের সঙ্গে এক বিশেষ সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে এসিপি সাহেবর। কিন্তু অভিনেতা প্রসূন বন্দোপাধ্যায় বাস্তব জীবনেও দীর্ঘ কিছু বছর জলপাইগুড়ি এবং মালদহ ডিভিশনে ডিআইজি পদে প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন। তার হাইট প্রায় ৬ ফিটের কাছাকাছি। অভিনেতা এবং নিজের কর্মক্ষেত্র উভয় জায়গাতেই তিনি পারদর্শী।
ধারাবাহিকে ‘ছোট মা’র প্রাক্তন প্রেমিক ছিলেন তিনি। যদিও সেই সময় তার প্রেমকে অস্বীকার করে কিয়ানের বাবাকে বিয়ে করেছিলেন ছোট মা, কারণ তিনি ছিলেন বিলাতি চিকিৎসক। কিন্তু বাস্তব জীবনেও পুলিশকর্তা অভিমন্যু কাজের প্রতি বরাবর দায়িত্ববান। জলপাইগুড়ি আর মালদহ অঞ্চলের ডিআইজি হিসেবে আমফান থেকে খরা, বন্যা সব সামলেছেন তিনি। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন ছোট পর্দার দুঁদে পুলিশ কর্তা হয়েই গল্পে নিজের পুরনো প্রেমিকার অতীত সামনে আনার লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি।
ইতিমধ্যেই অভিমন্যুর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। এসপি প্রসূন বন্দোপাধ্যায় হয়ে কারোর বাড়িতে গেলে তারা চমকে যেতেন ভয়ে, কিন্তু দেশের মাটির অভিমন্যুর পথ মানুষ আটকিয়ে অভিনয়ের প্রশংসা করছেন, এমনটাও জানান অভিনেতা।
তবে অভিনয়ের জন্য কি কোথাও গিয়ে তার চাকরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? এর উত্তরে প্রসূন বন্দোপাধ্যায় সাফ জানান, ‘‘আমি ৬ বছর বয়স থেকে অভিনয় করছি। পরবর্তীকালে তথ্যচিত্রে অভিনয় করেছি। নাটকের দল আছে আমার। নিয়মিত অভিনয় করি। কিন্তু যখন ওই খাকি পোশাকটা পরি তখন ওই ফ্যানপেজ, সংলাপ সব কিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলি। পুলিশ আর অভিনেতা দুই সত্তাকে আলাদা করতে পারি আমি।’’
আর তার এই পেশার উপর এতটাই ভালোবাসা, যে পরের জন্মেও পুলিশ হয়েই ফিরতে চান তিনি। তাই তার বক্তব্য, যে খাকি এক বার পরে নিয়েছে তার ডিএনএ তে খাকি ঢুকে যায়। শুধু অপরাধীদের নিয়ে চলা নয়, বন্যা থেকে করোনা— সবেতেই মানুষকে সেবা করার সুযোগ পুলিশই সরাসরি পায়।’’