কথায় আছে কঠিন সময়েই মানুষের আসল দিকটা দেখতে পাওয়া যায়। বাংলার এই প্রবাদ বাস্তবেও কিন্তু ১০০ শতাংশ ফলে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সাথে লড়াইয়ে বহু মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালের বেড অক্সিজেন পাওয়া থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন সময় দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেলেব্রিটি থেকে শুরু করে অনেক সাধারণ মানুষ।
আজ এমনই এক সাধারণ মানুষের কথা বলবো যিনি একজন স্কুল শিক্ষিকা। তবে সাধারণ মানুষের সাহায্যের জন্য তার উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। গতবছর থেকে দীর্ঘ লকডাউনে দেড় বছর ধরে বাড়িতে বসেই মাইনে পাচ্ছেন স্কুল শিক্ষিকা কেয়া সেন। কিন্তু এটা মন থেকে একেবারেই মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই মাইনের টাকা দিয়ে করোনা রোগীদের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) দান করলেন শিক্ষিকা।
যেমনটা জানা যাচ্ছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি বিএফপি স্কুলের শিক্ষিকা কেয়া সেন। বর্তমান ঠিকানা জলপাইগুড়ির ২০ নং ওয়ার্ড। শিক্ষিকার দুই সন্তান রয়েছে , আর তাঁর স্বামী একজন ব্যবসায়ী। করোনাকালের প্রথম থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। তাই বাড়িতেই আছেন তিনি। তবে প্রতিমাসেই মাইনে পেয়েচেন। এমতাবস্থায় অসহায় করোনা রোগীদের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন তিনি।
কেয়া দেবী নিজের বড় ছেলে স্পন্দনের সাথে এই বিষয়ে কথা বলেন ও শেষে অ্যাম্বুলেন্স দানের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে অ্যাম্বুলেন্স দান করেছেন শিক্ষিকা। কিন্তু একটি অ্যাম্বুলেন্সের দাম প্রায় ৭ লক্ষ্য টাকারও বেশি এতটাকা নেই তাঁর কাছে। অথচ স্থানীয় মানুষদের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার প্রয়োজন রয়েছে বেশ। তাই মাসিক কিস্তিতে অ্যাম্বুলেন্স কেনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
গত মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি শহরের ‘শ্রদ্ধা’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে অ্যাম্বুল্যান্সের চাবি তুলে দেন শিক্ষিকা। এই প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক সুমনবাবু বলেছেন, ‘ কেয়া দেবী আজ একটি অ্যাম্বুলেন্স দান করে নিজের বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর এই দান যাতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাজে ব্যবহার হয় সেই চেষ্টা করব’।
তবে, কেয়া দেবীর এই কাজ সত্যি তাকে অনেকটা মহান করে তুলেছে। তাঁর দান করা এই অ্যাম্বুলেন্সে বহু মানুষ উপকৃত হবেন এমনটাই আশা করা যায়।