করোনা ভাইরাসের জেরে হওয়া লকডাউনে বিপাকে পড়েছে টলিপাড়া। আরোভালো করে বলতে গেলে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাংলা সিরিয়ালগুলির। সিরিয়ালের নতুন পর্বের শুটিং (Shooting) হচ্ছে না টলিপাড়ায় যেকারণে দর্শকরা যেমন নতুন পর্বের থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি সিরিয়ালের গল্প স্লো হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সিরিয়ালের সাথে যুক্ত টেকনিশিয়ান থেকে শুরু করে কলাকূশলীরাও বাড়িতে বসা। যদিও বর্তমানে ওয়ার্ক ফ্রম হোম (Work From Home) করছেন সিরিয়ালের অভিনেতা অভিনেত্রীরা।
বাড়ি থেকেই ফোনে শুট করে পাঠানো হচ্ছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সেগুলি দিয়েই তৈরী করা হচ্ছে নতুন পর্ব যা দেখানো হচ্ছে টিভির পর্দায়। প্রযোজকদের মতে এছাড়া অন্যকোনো ভালো পথ খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা। ইতিমধ্যেই শুটিংয়ের অনুমতি চেয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও আবেদন জানানো হয়েছিল টলিপাড়ার তরফে। কিন্তু তার কোনো ফল হয়নি সুতরাং ওয়ার্ক ফ্রম হোমই এক একমাত্র উপায়।
কিন্তু মুশকিল হল বাড়ি থেকে শুটিংয়ের বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না টেকনিশিয়ান থেকে শুরু করে কলাকূশলীদের ফেডারেশন। তাদের মতে এভাবে কাজ চললে সিরিয়াল হয়তো চালু থাকবে কিন্তু তাদের রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। এই নিয়েই প্রযোজক ও ফেডারেশনের মধ্যে শুরু হয়েছে বিতর্কের বা একপ্রকার সংঘাতের।
গত সোমবারই আর্টিস্ট ফোরামের তরফে জানানো হয়েছিল যে ওয়ার্ক ফ্রম হোম এর মাধ্যমে শুটিং না হলে সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। এই প্রস্তাবে কিছু অংশ সমর্থন জানালেও ফেডারেশন গতকাল রাতেই বলে এটা সম্ভব নয়। কারণ এভাবে চললে বহু মানুষ বঞ্চিত হয়ে পড়বেন যারা প্রতক্ষ্যভাবে সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত। তাই এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া সম্বব নয় ফেডারেশনের পক্ষে এমনটাই জানান সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। আর্টিস্ট ফোরামের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা জানিয়ে ইতিমধ্যেই বিবৃত জারি করেছে ফেডারেশন।
ওয়ার্ক ফ্রম হোম নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে তখন সিরিয়ালের বিরুদ্ধে অল্প কিছু টেকনিশিয়ান নিয়ে হোটেলে শুটিংয়ের অভিযোগ উঠল। যেখানে টলিপাড়া বন্ধ থাকার জেরে বন্ধ শুটিং সেখানে ‘যমুনা ঢাকি’, ‘বরণ’ এর মত কিছু সিরিয়ালের বাড়ির বাইরের চিত্র ধরা পড়ছে নতুন এপিসোড। অর্থাৎ হোটেল ভাড়া করেই চলছে শুটিং এমনটাই অভিযোগ ফেডারেশনের। যদিও এই বিষয়ে ফেডারেশনের অভিযোগ মিথ্যে বলেই জানিয়েছেন পরিচালক স্নেহাশীষ চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, আর্টিস্ট ফোরামের মতে বাড়ি থেকে শুটিং চালিয়ে যদি সিরিয়াল চালানো সম্ভব হলে সকলেই লাভবান হবেন। সিরিয়ালের অভিনেতা অভিনেত্রীরা যেমন তাদের পারিশ্রমিক পাবেন তেমনি টেকনিশিয়ানদেরও ১০ ঘন্টা কাজের পারিশ্রমিক দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। সাথে এও বলা হয় যদি কোনো কারণে সিরিয়ালের সম্প্রচারে কোনো প্রকার বাধা আসে তাহলে টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। এখন পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে কিভাবে সিরিয়ালের শুটিং হবে আর কিভাবে নতুন পর্ব দেখতে পাবে দর্শকরা সেই নিয়েই তৈরী হচ্ছে অনিশ্চয়তার।