করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে লকডাউনের পথে হেঁটেছ রাজ্য। লকডাউনে স্কুল, কলেজ, সরকারি বেসরকারি অফিস থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের প্রাণকেন্দ্র টলিপাড়ায় জারি নিয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আর টলিপাড়া বন্ধ হওয়ায় সিরিয়ালের শুটিং স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। যে কারণে প্রযোজকদের মাথায় হাত তো উঠেছেই সাথে দর্শকদেরও চিন্তা বেড়ে গিয়েছে। একে ঘরবন্দি, তারপর নানান চিন্তার শেষ নেই। এমন সময়ে বিনোদনের যে পথ সিরিয়াল।
অথচ লকডাউনের জেরে নতুন পর্বের শুটিং না হলে নতুন পর্ব যে দেখতে পাওয়া যাবে না টিভিতে। গতবছর দীর্ঘ ৮ মাসের লকডাউনে পুরোনো সিরিয়ালের রিপিট টেলিকাস্ট দেখিয়ে কাজ চালানো হয়েছিল। যার জেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল চ্যানেলের ও প্রযোজকদের। সাথে সিরিয়ালের অভিনেতা অভিনেত্রী থেকে শুরু করে টেকনিশিয়ান ও মেকআপ আর্টিস্টরাও বেকার হয়ে পড়েছিলেন।
অবশ্য এবার আগের বছরের থেকে শিক্ষা নিয়ে কিছু আগাম শুটিং করা ছিল। যার জেরে গতমাসের মাঝামাঝি থেকে লকডাউন শুরু হলেও এপর্যন্ত বেশ কিছু সিরিয়ালে নতুন পর্বই দেখানো হচ্ছে। আবার কিছু সিরিয়ালে বাড়ি থেকেই ফোনে শুট করে সেগুলো একত্রিত করে তৈরী করা হচ্ছে এপিসোড। কিন্তু এভাবে আর কতদিন। যেটুকু সিরিয়াল ব্যাঙ্কিং করা ছিল তা প্রায় শেষের দিকে।
আর খুবজোর তিন দিনের মত চালানো যাবে বেশিরভাগ সিরিয়াল এরপর কি হবে সেই নিয়েই চিন্তিত টলিপাড়া। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে টলিপাড়ার তরফে আবেদন করা হয়েছে যাতে শুটিংয়ের অনুমতি মেলে তবে এপর্যন্ত কোনো ঘোষণা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মেলেনি। এভাবেই চলতে থাকলে বাংলা সিরিয়াল গুলির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলেই মনে হচ্ছে।
যেমনটা জানা যাচ্ছে ৪ঠা জুন পর্যন্ত চলতে পারে ‘খড়কুটো’ সিরিয়ালের নতুন পর্ব। অন্যদিকে ‘দেশের মাটি’ ও ‘শ্রীময়ী’ সিরিয়াল চলবে ২রা জুন পর্যন্ত।আর ‘মোহর’ সিরিয়াল তো ১লা জুন পর্যন্তই নতুন এপিসোড দেখতে পারবে। এরপর টলিপাড়া না খুললে ওয়ার্ক ফ্রম হোম অর্থাৎ বাড়ি থেকে শুটিংই একমাত্র রাস্তা। যদিও এ নিয়ে আবার দ্বিমত রয়েছে। কারণ বাড়ি থেকে শুটিংয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছে ফেডারেশন।
ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফ টেলিভিশন প্রোডিউসার্স এর তরফে মঙ্গলবারই জানানো হয়েছে যে বাড়ি থেকে শুটিং করে বর্তমানে একমাত্র উপায়। যদি সেটা সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে সমস্ত অভিনেতা অভিনেত্রীরা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবেন। তাদের পাশাপাশি বাকি টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য টিম সদস্যদেরও পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। কিন্তু শো বন্ধ থাকলে টিমের সদস্যদের পারিশ্রমিক দেওয়া সম্ভব হবে না। আর্টিস্ট ফোরামের একাংশ এই প্রস্তাবে সম্মতি জানালেও ফেডারেশন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
জানা যাচ্ছে শীঘ্রই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসম্মতি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। তবে এই যদি চলতে থাকে তাহলে বাংলা সিরিয়ালের ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চিত হতে চলেছে সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহই থাকবে না। এখন দেখার বিষয় শেষমেশ কি সিদ্ধান্তে পৌঁছায় সবাই মিলে।