আজ বর্ণবিদ্বেষ আন্দোলন নিয়ে সরব গোটা বিশ্ব। কিন্তু আমাদের চারপাশেই প্রতিনিয়ত আমরা মানুষকে তার দক্ষতা দিয়ে নয় বিচার করি গায়ের রঙ দিয়ে। ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন, আর বিউটি টিপসে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় জানতে নেটিজেনদের আগ্রহ দেখলেই বোঝা যায়, তারা তাদের ‘গায়ের রং’ নিয়ে ঠিক কতটা ভাবিত।
ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় নতুন মুখ ‘ত্রিনয়নী’ (Trinayanee) ধারাবাহিকের নয়ন ওরফে শ্রুতি দাস (Shruti Das)। প্রথম ধারাবাহিকেই দর্শকদের বিপুল ভালোবাসা কুড়িয়েছেন এই টেলি নায়িকা। প্রায়শই খবরের শিরোনামেও উঠে আসেন তিনি। ত্রিনয়নী শেষ হওয়ার পর পরই নিজের অভিনয়ের দক্ষতায় ‘দেশের মাটি’ (Desher Mati) ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান তিনি।
কিন্তু এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজ সকলের ভালোবাসা পেলেও, একসময় তার শ্যামলা গায়ের রঙের জন্য কম অসম্ভব অপমানিত হতে হয়েছিল। কাটোয়ার মত মফস্বল থেকে দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন অভিনেত্রী। একদিকে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা, অন্যদিকে মডেল হওয়ার জেদ। এর থেকেই প্রথমবার অডিশন দেন শ্রুতি আর তাতেই ছেঁড়ে তার ভাগ্যের শিকে।
এই বর্ণবিদ্বেষীদের হাত থেকে রেহাই পাননি অভিনেত্রী শ্রুতি দাসও। অভিনয়ে দক্ষতা থাকলেও ইন্ডাস্ট্রিতে গায়ের রং এর কারণে অসংখ্য অপমান গঞ্জনা সইতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। শরীর ভালো নেই অভিনেত্রীর। কদিন আগেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি, কিন্তু তবুও তাকে কটাক্ষ করা বন্ধ হয়নি।
নিজের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর নেট মাধ্যমে জানাতেই অনেকেই তাকে ভরিয়ে দিয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তায়, আরোগ্য কামনায়। কিন্তু সেই একই পোস্টে ঝড়ে ঝড়ে পড়েছে মানুষের নীচ মানসিকতার প্রতিফলন। একজন লিখেছেন বাঁচা গেল ‘এই মুখটা আর দেখতে হবেনা’, আবার আরেকজন লিখেছেন, ” না খেয়ে মর”। অনেকেই এই কমেন্ট দেখেও চুপ করেই ছিলেন। কিন্তু এবার শ্রুতির প্রতি এহেন আচরণের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন টলিপাড়ার আরও দুই অভিনেত্রী। শ্রুতির অভিন্ন হৃদয় বন্ধু মানসী সিং এবং অন্বেষা হাজরা সেই নেটিজেনকে বললেন, “একজনের করোনা হয়েছে, তার যন্ত্রণা না বুঝে এভাবে কথা বলছেন কীভাবে? আপনিও তো একজন মহিলা। আপনি বোধহয় শুধু মহিলা হয়েই রয়ে গেছেন মানুষ হতে পারেননি। ” মানসী সিং লিখেছেন, “আমি গর্বিত ওকে নিয়ে ও নিজের যোগ্যতায় পরিচিত হবে গায়ের রঙে না”।