কথায় আছে মানুষ চাইলে সবই করতে পারে। তবে ইচ্ছাপূরণ করতে গেলে লাগে কঠিন পরিশ্রম আর মনের জেদ। বলিউডের অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন (Sushmita Sen) অবশ্য এই কথাটির একেবারে জলজ্যান্ত উদাহরণ। বর্তমানে সুস্মিতা সেনকে বলিউড অভিনেত্রী (Bollywood Actress) হিসাবে অনেকেই চেনেন। তবে শুরু থেকেই এতটা মসৃণ ছিল না পথ। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তবেই আজ এই জায়গায় নিজেকে দাঁড় করাতে পেরেছেন অভিনেত্রী। অভিনেত্রী ১৯৯৪ সালে মিস ইন্ডিয়া হয়েছিলেন। এবার সেই কাহিনীই আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
আগেই বলেছি সালটা ছিল ১৯৯৪। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই মিস ইন্ডিয়া (Miss India) হবার দৌড়ে শামিল হয়েছিলেন সুস্মিতা সেন। বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক হলেও সে সময় কিন্তু আর পাঁচটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছিলেন সুস্মিতা সেন। এদিকে মিস ইন্ডিয়া হতে গেলে যে দামি পোশাক ও প্রসাধনী লাগে, তাই মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে হয়ে মিস ইন্ডিয়া হওয়াটা এতটাও সহজ ছিল না অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের কাছে। যদিও পারিবারীক স্বচ্ছতা ছিল বেশ খানিকটা তবে মিস ইন্ডিয়া হবার জন্য অনেক ইচ্ছাশক্তি আর মনের জোর নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছিল অভিনেত্রীকে।
সুস্মিতা সেনের বাবা ভারতীয় বায়ুসেনাতে কর্মরত ছিলেন। আর মা ছিলেন একজন গয়না গিজাইনার।মা বাবা দুজনেই কাজ করতেন। আর এদিকে সুস্মিতা সেনও ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেন ভারতের নাম উজ্জ্বল করার। মিস ইন্ডিয়া হবার ইচ্ছা ছিল ১৮ বছর হবার অনেক আগে থেকেই। কিন্তু মিস ইন্ডিয়ার মঞ্চে সবার থেকে আলাদা দেখতে হলে যে দামি পোশাক লাগবে। যা কেনার মত টাকা সুস্মিতার পরিবারের সেই সময় ছিল না।
কম্পিটিশনের প্রথম তিনটি রাউন্ড হয়ে যাবার পর চতুর্থ রাউন্ডে উঠতে হবে। চতুর্থ রাউন্ডের জন্য লাগবে গাউন, অথচ গাউন কেনার মত টাকা ছিল না। তখন সুস্মিতা সেনের মা আসেন উদ্ধারে। অভিনেত্রীর মা এক দর্জির কাছে গিয়ে হাজির হন গাউন বানানোর জন্য। এরপর সেই দর্জি আর অভিনেত্রী মা মিলে সুস্মিতার জন্য গাউন তৈরী করেন। শুধু গাউন হলেই চলবে না গাউনের সাথে হাতে পড়তে হয় লম্বা গ্লাভস। শেষমেশ কালো মোজা কিনে তা দিয়েই হাতের জন্য গ্লাভস বানিয়ে নেন অভিনেত্রী।
মায়ের তৈরী এই পোশাক পরেই সেদিন মিস ইন্ডিয়ার মঞ্চে উঠেছিল সুস্মিতা সেন। এরপর যা ঘটল তা সকলেরই জানা সেদিন মিস ইন্ডিয়ার মুকুট অপেক্ষা করছিল অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের মাথায় ওঠার জন্য। অভিনেত্রী নিজেই তার জীবনের এই ঘটনার কথা সকলের সামনে এনেছিলেন। এর থেকেই শিক্ষা পাওয়া যায় যে হাল ছাড়তে নেই। আজ হয়তো অভিনেত্রী সাফল্যের শিখরে আছেন। কিন্তু তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। সেটা যে করতে পারবে তার জন্য সাফল্য লেখা থাকবেই।