শীত জমে ক্ষীর! আর শীত মানেই বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠে পুলি বানানোর ধুম। নলেন গুড়ের সঙ্গে ক্ষীরের যোগ্য সংগতে এই সময়ে বাঙালির অন্যতম প্রিয় এবং পছন্দের খাবার জয়নগরের মোয়া (Joynagar Moa)। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় এই মোয়ার কদর এতদিন সারা দেশের মানুষ করে এসেছে তা বলাই বাহুল্য। এমনকি ইতিমধ্যেই জিআই তকমাও (GI Tag) পেয়ে গিয়েছে বাংলার এই জনপ্রিয় খাবার। এই প্রথমবার বিদেশে পাড়ি দিতে চলেছে জয়নগরের মোয়া। প্রায় এক শতাব্দীর বেশি সময় কেটে যাওয়ার পর এই প্রথমবারের জন্য বিদেশে রফতানি করা হল পশ্চিমবাংলার (West Bengal) বিখ্যাত জয়নগরের মোয়া।
বাংলার মাটিতে প্রায় একশত বছরেরও বেশি সময় ধরে তৈরি হয়ে আসছে জয়নগরের মোয়া। শীতকালে এই মোয়া তৈরি হয় জয়নগরের গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে। এবার এই মোয়াই রওনা দিল বাহারিনের উদ্দেশ্যে। জানা যাচ্ছে বাহারিনে এই রফতানি সাফল্য পেলে ইতালি এবং কানাডার মত দেশেও পাওয়া যাবে জয়নগরের মোয়া।
এই প্রসঙ্গে জয়নগর মোয়া নির্মাণকারী সংস্থার সম্পাদক অশোক কুমার কয়াল জামাম, ‘ গোটা এক শতাব্দীতে এই প্রথমবারের জন্য জয়নগরের মোয়া বিদেশে রফতানি হল। ১৯০৪ সাল থেকে এই মোয়া বানানো শুরু হয়েছিল। এবার ৪৫ কিলো জয়নগরের মোয়া, ১০৫ কিলো পাটালি গুড় রফতানি করা হয়েছে বিদেশের উদ্দেশ্য।’
মূলত দক্ষিন ২৪ পরগণা জেলার বিখ্যাত জনপদ জয়নগর প্রসিদ্ধ এই মোয়ার জন্যেই। ২০০৪ সালেই জিআই তকমা অর্জন করে জয়নগরের মোয়া। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে যে জিআই জার্নাল প্রকাশিত হয়েছিল তাতে উল্লেখ রয়েছে, ১৯০৪ সালে প্রথম এই মোয়া তৈরি করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগর এলাকার বাসিন্দা আশুতোষ দাস।
জয়নগরের এই মোয়া তৈরি করতে লাগে কনকচূড় খই, নলেন গুড়, ঘি, খোয়া ক্ষীর, কার্ডামম, রাইসিনস এবং কাজু বাদাম। গোটা জয়নগর জুড়ে মোয়া তৈরির ২৫ টি উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। একেকটা মোয়া তৈরি করতে খরচ পড়ে প্রায় ৩০ টাকা। অশোক কুমার কয়াল জানান, এক কিলো মোয়ার দাম ৫০০ টাকা।