দীর্ঘ লকডাউনে অন্যান্য ক্ষেত্রের পাশাপাশি বন্ধ ছিল সবরকমের শ্যুটিং। আর বর্তমানে লকডাউন-পরবর্তী সময়ে হিন্দি-ইংরেজি ছবির রমরমায় কিছুটা ব্যাকফুটেই ছিল টলিউড। এমতাবস্থায় একটু অন্য ধাঁচের বাংলা ছবি রুপোলি পর্দায় হাজির করলেন পরিচালক মৈনাক ভৌমিক (Mainak Bhowmik)। ভিন্ন স্বাদের ছবি ‘চিনি’-(cheeni)র মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মধুমিতা সরকার (Madhumita Sarcar) ও অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Addhya)।
এইবারে একটু অন্যরকমের মা-মেয়ের গল্প বলতে চেয়েছেন মৈনাক। মা মিষ্টি (অপরাজিতা আঢ্য) ও মেয়ে চিনি (মধুমিতা সরকার)-র সম্পর্কের নানা দিককে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। চিনির বাবা গত হলেও তার অত্যাচারের কাহিনী যেন বাড়ির আনাচে-কানাচে লেগে। আর তাই যেন সুদীপ (সৌরভ দাস)-র সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে থাকে চিনি। অফিসে নানাবিধ কাজের চাপ আর থেরাপিস্টের কাছে কাউন্সেলিং করানোর মধ্যে দিয়ে দিন কাটে চিনির। অন্যদিকে চিনির মা-ও নিজের ভাল থাকার পথ খুঁজে নিতে চায় অন্যভাবে।
দুই প্রজন্মের ‘জেনারেশন গ্যাপ’ হোক বা প্রেমিক আর মায়ের মধ্যের চাপা দ্বন্দ্ব, মধ্যবিত্ত জীবনের প্রত্যেক খুঁটিনাটি ফুটে উঠেছে ছবির পরতে পরতে। অন্যদিকে জীবনের যেকোনো সম্পর্কের ব্যাপারে চিনির অস্বস্তির কারণ জানা যায় মা-মেয়ের বাক্যালাপেই। মিষ্টির কথাতেই উঠে আসে চিনির অস্থির ছোটবেলার দিনগুলো। আর পাঁচটা বাড়ির মত সন্তানের কাছে বাধা পাওয়া অত্যাচারী বাবা বা মারণব্যাধি ধরা পড়ে মৃত্যুশয্যায় আশ্রয় নেওয়ার মত বেশ কিছু প্রত্যাশিত মোচড়ের কারণেই যেন গল্পটা বেশ খেলো হয়ে পড়ে দর্শকদের কাছে।
ছবিতে টলিউডের পোড়খাওয়া অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য বেশ সাবলীল। অন্যদিকে কিছু দৃশ্যে মধুমিতা সরকার বেশ ভাল হলেও গল্পের চাহিদার কারণেই যেন ঢেকে গেছে তাঁর সহজাত অভিনয় ক্ষমতা। যদিও খুব কম সময়ের উপস্থিততেও নজর কেড়েছেন সৌরভ। অন্যদিকে ছবির লগ্নজিতা চক্রবর্তীর কণ্ঠে ‘তোমার চোখের শীতলপাটি’ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। দর্শকদের মতে, ছবির দৃশ্যপট বেশ ক্লান্তিকর ও একঘেঁয়ে। যদিও বড়দিনের আবহে করোনাকে দু’দন্ড ভোলার জন্য ‘ওয়ানটাইম ওয়াচ’ হিসেবে বেছে নেওয়া যেতেই পারে মৈনাকের ‘চিনি’-কে!