নিজের মৃত্যুর ভুয়ো খবর ছড়িয়ে নেটিজেনদের রোষের মুখে পড়েছেন পুনম পাণ্ডে (Poonam Pandey)। ক্যানসার সচেতনতা ছড়ানোর যে পন্থা অভিনেত্রী বেছে নিয়েছিলেন তা পছন্দ হয়নি বেশিরভাগ মানুষের। এত অল্প বয়সে, ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে পুনমের আকস্মিক মৃত্যুর খবর শুনে কষ্ট পেয়েছিলেন বহু মানুষ। তবে পরের দিন ভিডিও শেয়ার করে অভিনেত্রী যখন জানালেন, তিনি বেঁচে আছেন, তখন নিমেষের মধ্যে সেই কষ্ট পরিণত হয় ক্ষোভে। প্রশ্ন ওঠে, শুধু কি সার্ভিক্যাল ক্যানসারের সচেতনতা প্রচারই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল?
বলিউডের একাধিক সেলেব পুনমের এই কাণ্ডের নিন্দা করেছেন। চতুর্দিকে এই নিয়ে চর্চা-আলোচনা হচ্ছে। এসবের মাঝেই অভিনেত্রী পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুললেন বাংলার গায়ক শিলাজিৎ মজুমদার (Silajit Majumder)। ফেসবুকে একটি দীর্ঘ নোট শেয়ার করে নিজের মতামত জানালেন তিনি। গায়ক লেখেন, ‘পরম পূজনীয় পুনম। আপনার সাথে আমার আলাপ নেই। আপনি কী কী কাজ করেছেন আমি জানি না। কিন্তু আপনার এই খেলাটা আমার দারুণ লেগেছে। ম্যাডাম আপনাকে প্রণাম। আপনি যে থাপ্পড়টা মারলেন বড় বড় সেয়ানাদের, জাস্ট বিষ দাঁত ভেঙে দিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, আপনি এটা জ্ঞানত করেছেন এবং বেশ করেছেন’।
এরপর সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে শিলাজিৎ (Silajit) লেখেন, ‘ফ্রন্টলাইন মিডিয়ার আসল কঙ্কালসার চেহারা আপনি এক্স-রে করে দেখিয়ে দিয়েছেন। এরা যে কতটা ঝুরঝুরে বালির মতো আসলে, সেটা আপনি চোখে চুরি মেরে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমি ভাবছি কালকে প্রিন্ট মিডিয়াগুলো কী করবে। যারা ঠিক করে দিত কারা গুরুত্বপূর্ণ, কারা প্রাসঙ্গিক, কারা নক্ষত্র… তাদের এরকম হ্যাটা কেউ করেনি। কী লিখবে ওরা? ভুলবশত ছেপেছে, নাকি লিখবে… পড়তে হবে “পুনম পাণ্ডে মারা গেছেন” এর জায়গায় “পুনম পাণ্ডে মারা যাননি” এটা পড়তে হবে…’।
পুনমের ‘ডেথ স্টান্ট’কে এরপর ‘বিপ্লব’ আখ্যা দিয়ে শিলাজিৎ লেখেন, ‘আপনাকে সেলাম, আপনি আমাকে না চিনেও, না জেনেও, আমার মতো অনেকের ভেতরে লুকিয়ে থাকা বিপ্লবটা করে দিয়েছে। এর জন্য আপনাকে কোনও ঘোষিত রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে হয়নি। এখনও পর্যন্ত। কাল কী হবে জানি না। আপনি কতটা এফেক্টিভ হবেন জানি না, কিন্তু আপনি যা করলেন এটা আমি বিপ্লব বলে বুঝলাম। আগামী কাল সেটা কী হবে? পতাকা? প্রতীক? পার্টি? না প্রপার্টি? জানি না, কিন্তু ইতিহাস হল…’।
শিলাজিতের এই পোস্টে নেটাগরিকদের তরফ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে। কেউ লিখেছেন, ‘সব বুঝলাম, তবে বাংলা শিলাজিৎ মারা গিয়েছেন শুনলে শুধু বাঙালিই সত্যি সত্যি হাহাকার করে কাঁদবে নাকি বাকি ভারত সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা করবে না। অথবা হিন্দি-ভাষী কেউ মরলে বা না মরে বেঁচে উঠলে আপামর বাঙালির কত আলোচনা কত পোস্ট’।
দ্বিতীয়জনের আবার মত, ‘শিলু দা, মনের মধ্যে যা ঘুরছিল তুমি লিখে ফেললে… গুরু গুরু’। তৃতীয়জনের কমেন্ট, ‘এসব নতুন কিছু নয়। তিরিশ বছর আগে থেকে ইন্টারন্যাশানাল মিডিয়ায় ডেথ স্টান্ট চলছে। এসব করার জন্য আলাদা পিআর টিম লাগে। যেটা উন্মুক্ত হয়েছে সেটা হল ভারতীয় শিক্ষিত কনসিউমারও আসলে অশিক্ষিত। কোনও সঠিক কনফারমেশন ছাড়া খবর বিশ্বাস করাটা আমাদের অভ্যেস হয়ে গিয়েছে’।