ভারতীয় সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। মৃত্যুর পরেও তিনি জীবিত রয়েছেন তাঁর অসংখ্য অনুরাগীদের হৃদয়ে। তাঁর গানই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে ভক্তদের মনের সিংহাসনে। এক বছর আগেই ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি অমৃতলোকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন সুরসাম্রাজ্ঞী। তাঁর কোকিল কণ্ঠী গলার ভক্ত গোটা সংগীত জগৎ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়েছে তাঁকে। কখনও তিনি ‘ক্যুইন অফ মেলোডি’ আবার কখনও তিনি ‘প্রাইড অফ ইন্ডিয়া’, আবার তিনিই হলেন ভারতের ‘নাইটিঙ্গল’।
সংগীত জগতের তাঁর শূন্যস্থান অপূরণীয়। গানের জগতে বিরাট অবদানের জন্য একসময় লতা মঙ্গেশকর পেয়েছিলেন আমাদের দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন এবং দাদাসাহেব ফালকের মতো পুরস্কারও। সুরসাম্রাজ্ঞীর মৃত্যুর পর এবার তাঁর শেষ ইচ্ছাপূরণ করল আত্মীয়রা। লতাজি বরাবরই ভগবান তিরুপতির ভক্ত ছিলেন।.তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল তাঁর মৃত্যুর পর তিরুপতি বালাজি ট্রাস্ট কে তিনি ১০ লক্ষ টাকা দান করবেন।
সেই ইচ্ছা পূরণ করেই এবার তিরুপতি বালাজি ট্রাস্টকে ১০ লক্ষ টাকা দান করল সুর সাম্রাজ্ঞীর পরিবার। লতা মঙ্গেশকরের বোন ঊষা মঙ্গেশকর TTD-এর মুম্বই প্রতিনিধি মিলিন্দ কেশব নার্ভেকরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অনুদান হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। পরিবারের অনুরোধের পর, টিটিডি বোর্ডের সদস্য মিলিন্দ তিরুপতি বালাজির ট্রাস্টে অনুদানের চেক পৌঁছে দেন।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোরের একটি মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। পাঁচ ভাইবোনের মধ্য লতাই ছিলেন সবচেয়ে বড় ৷ বাবা দীননাথ মঙ্গেশকরের কাছেই প্রথম গানের তালিম নিয়েছিলেন তিনি। মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই গানে হাতেখড়ি হয়েছিল সুরসাম্রাজ্ঞীর। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই প্রথম গান রেকর্ড করেছিলেন মাতাজী।
আট দশকের কেরিয়ারে ৩৬টি ভাষায় ৫০ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। শৈশবে বাড়িতে থাকাকালীন কে এল সায়গল ছাড়া আর কিছু গাইবার অনুমতি ছিল না তাঁর। তাঁর বাবা চাইতেন লতা শুধু ধ্রপদী গান নিয়েই থাকুন।কেরিয়ারের শুরুর দিকে সিনেমায় অভিনয়ও করেছেন লতা। কিন্তু ক্যামেরার সামনে আসা কোনওদিনই পছন্দ ছিল না তাঁর। তিনি প্রথম অভিনয় করেছিলেন মারাঠি সিনেমাতে।
প্রথমবার স্টেজে পারফর্ম করে উপার্জন করেছিলেন ২৫ টাকা । পরবর্তীতে তিনিই ছিলেন প্রায় ৩৭০ কোটির মালিক। গানের রয়্যালিটি থেকে মাসে ৪০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি আয় করতেন সুর-সম্রাজ্ঞী। বছরে পেতেন প্রায় ৬ কোটি টাকা। শৌখিন গাড়ি কেনারও শখ ছিল তাঁর।