ভিলেন রূপে মহিলারা যে কতখানি ভয়ঙ্কর হতে পারে তা প্রমাণ করে দেখিয়েছিলেন অনামিকা সাহা (Anamika Saha)। খলনায়িকা রূপে একাধিক সুপারহিট বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘বিন্দু মাসি’ (Bindu Masi) চরিত্রটি তো এখনও সিনেপ্রেমী মানুষদের মনে আছে। গ্রামে-গঞ্জে এখনও অনামিকাকে এই নামেই মানুষজন চেনে। অথচ সেই অভিনেত্রীকেই আজ দেখা যায় না বড়পর্দায়।
একটা সময় ছিল যখন অনামিকাকে ছাড়া কাউকে খলনায়িকা হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবতেই পারতেন না চলচ্চিত্র নির্মাতারা। প্রায় ২০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। অথচ এখন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিনেত্রীকে যেন ভুলতে বসেছে টলিউড (Tollywood)। দীর্ঘদিন হয়ে গেল সিনেমায় দেখা নেই তাঁর।
অনেকেই জানেন না, অভিনয়ে আসার আগে অনামিকার নাম ছিল ঊষা। ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পর নিজের নাম বদলান তিনি। যদিও সবকিছু এত সহজে হয়নি। অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রচুর লড়াই করতে হয়েছিল তাঁকে। শ্বশুরবাড়িতে কথা শোনার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিতে স্থান করে নেওয়ার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছিল অভিনেত্রীকে।
একবার এক সাক্ষাৎকারে অনামিকা বলেছিলেন, বড় শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য তিনি পরিচালকদের পায়ে পর্যন্ত পড়েছেন। বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর কথায়, বড় তারকাদের অভিনয় দেখেই তিনি শিখতে চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, টলিপাড়ার এই দাপুটে খলনায়িকা একবার জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায়ের কাছে থাপ্পড়ও খেয়েছিলেন।
এত কিছুর পরেও কখনও হার মারেননি অনামিকা। নিজের তুখোড় অভিনয়ের জেরে মুম্বই থেকেও ডাক পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মায়ানগরীতে ভালো না লাগায় ফের কলকাতায় ফিরে আসেন অভিনেত্রী। অথচ এখন সেই অনামিকাই আর সিনেমায় কেউ ডাকে না!
মাঝখানে ছোটপর্দায় বেশ কিছু ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন অনামিকা। ‘লালকুঠি’ এবং ‘এক্কা দোক্কা’ ধারাবাহিকে কাজ করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। তবে বাংলা সিনেদুনিয়ায় তিনি একপ্রকার ব্রাত্যই হয়ে গিয়েছেন। কৌশিক গাঙ্গুলী, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজের ইচ্ছা থাকলেও কেউ অনামিকাকে ডাকেন না। মাঝখানে বেশ কয়েকবার কিছু সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছিল। তবে এখন আর কিছু বলেন না দর্শকদের প্রিয় ‘বিন্দু মাসি’।