Kishore Kumar didn’t take fees from Satyajit Roy : বাংলা তথা বাঙালির তো বটেই, গোটা ভারতবর্ষের গর্ব হলেন কিশোর কুমার (Kishore Kumar)। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি। গান লেখা, সুর দেওয়া, গান গাওয়া থেকে শুরু করে অভিনয়, পরিচালনা- সব বিষয়েই অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন কিশোর কুমার। পাশাপাশি তিনি ছিলেন কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) গুণমুগ্ধ ভক্ত। দুই শিল্পীর মধ্যে ছিল এক অনন্য সংযোগ।
কিশোর কুমার এমন একজন শিল্পী ছিলেন যিনি নিজের পারিশ্রমিক সম্পর্কে সবসময় অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট থাকতেন। তবে সেই শিল্পীই সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে কাজ করে কোনও পারিশ্রমিক নেননি। সত্যজিৎ রায়ের আইকনিক সিনেমা ‘চারুলতা’র (Charulata) জন্য একটি রেকর্ড করার পরে কিশোর কুমার নিজের পারিশ্রমিক গ্রহণ করে কেবলমাত্র একটি জিনিস করেছিলেন। কী সেই জিনিস? জানলে গায়কের প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যাবে।
সত্যজিৎ রায় এমন একজন পরিচালক ছিলেন যার সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকতেন বহু শিল্পী। কিশোর কুমারও ব্যতিক্রম ছিলেন না। তাই ‘চারুলতা’য় কাজ করার সুযোগ তাঁর কাছে অনেকটা হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো বিষয় ছিল। আর সেই কাজের জন্য কোনও প্রকার পারিশ্রমিক নেননি তিনি। শুধুমাত্র সত্যজিৎ রায়ের চরণ স্পর্শ করে আশীর্বাদ নিয়েছিলেন।
শুধু এটাই অবশ্য নয়, সত্যজিৎ রায় এবং কিশোর কুমারকে নিয়ে আরও একটি মজার কাহিনী রয়েছে। যা হয়তো অনেকেই জানেন না। ১৯৬৪ সালে নিজের একটি সিনেমার প্রিমিয়ারের জন্য কলকাতায় এসেছিলেন কিশোর কুমার। প্রিমিয়ার শেষ হওয়ার পর তিনি সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা করতে শ্যুটিং ফ্লোরে এসেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ সুচিত্রাকে টেক্কা দিয়ে হতে পারতেন মহানায়িকা, কেন হারিয়ে গেলেন উত্তম কুমারের নায়িকা আরতি?
আরও পড়ুনঃ জন্মসূত্রে দক্ষিণ ভারতীয়, তবে বাংলা অন্ত প্রাণ! ঊষা উত্থুপ কেন ‘ক’ লেখা টিপ পড়েন জানেন?
এরপর দুই শিল্পীর মধ্যে আসন্ন একটি সিনেমা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কথাবার্তার মাঝেই হঠাৎ কিশোর কুমার বলে ওঠেন, তিনি একটি ছবি পরিচালনা করবেন। সেই সিনেমায় অভিনয় করার জন্য সত্যজিৎ রায়কে অনুরোধ করেন তিনি। একথা শুনে প্রথমে একটু অবাক হয়ে যান পরিচালক। এরপর আরও একটি বোমা ফাটান কিশোর কুমার। তিনি বলেন, একটি শর্ত রয়েছে। তিনি অস্কারজয়ী পরিচালককে বলেন, পুরো সিনেমার জন্য তাঁকে হাফ প্যান্ট পরতে হবে। একথা শোনামাত্রই হাসিতে ফেটে পড়েন সত্যজিৎ রায়।
অনেকে হয়তো আজও জানে না, কিশোর কুমার না থাকলে হয়তো ‘পথের পাঁচালী’ তৈরি করতে পারতেন না সত্যজিৎ রায়। আসলে এই আইকনিক ছবি তৈরির সময় আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন পরিচালক। তিনি ভেবেছিলেন, ছবিটি বানানো ছেড়ে দেবন। সেই সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন কিশোর কুমার। ৫০০০ টাকা দিয়ে ‘পথের পাঁচালী’কে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।