কোনও রকম সাহায্য ছাড়া, শুধুমাত্র নিজের প্রতিভার জোরেও বলিউড (Bollywood) ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করা যায় তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন বাংলার গর্ব মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতা থেকে সম্পূর্ণ অচেনা এক শহরে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। দিনের পর দিন দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে ‘সুপারস্টার’ হয়েছেন এই বঙ্গ তনয়। সাফল্যের নিরিখে রীতিমতো সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চনকে (Amitabh Bachchan) টেক্কা দিতেন তিনি।
মুম্বইয়ে গিয়ে দীর্ঘ সময় সংগ্রাম করতে হয়েছিল মিঠুনকে। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কোনও চেনা পরিচিতি ছিল না। সেই সঙ্গে গায়ের রঙের জন্য প্রচুর পরিচালক তাঁকে অপমানও করতেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও হার মানেননি ‘মহাগুরু’। লড়াই করে আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছেন তিনি। আশির দশকে বি টাউন কাঁপানো সুপারস্টারদের মধ্যে একজন হলেন মিঠুন।
সেই সময় আবার বলিউডে শাসন করছেন অমিতাভ। একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিচ্ছেন ‘বিগ বি’। তাঁর সামনে রীতিমতো ফিকে দেখাতো ইন্ডাস্ট্রির বাকি তারকাদের। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিলেন মিঠুন। অমিতাভের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই অভিনেতা ‘গরিবের অমিতাভ বচ্চন’ (Poor Man’s Amitabh Bachchan) তকমাও পেয়েছিলেন।
বেশ কয়েক বছর পরে এই বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছিলেন ‘ডিস্কো ডান্সার’। অমিতাভকে ‘শতাব্দীর সেরা অভিনেতা’ আখ্যা দিয়ে এই বঙ্গ তনয় বলেছিলেন, ‘সেই সময় বচ্চন সাহেব সব বড় ব্যানারের সিনেমায় অভিনয় করতেন। আর আমার কাছে কোনও ব্যানারই ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার সিনেমার ব্যবসাও প্রায় ওঁর ছবির কাছাকাছিই যেত। লোকে বলতো, এ-ও অমিতাভ বচ্চন, তবে গরিবের’।
লোকে তাঁকে নিয়ে মশকরা করলেও, মিঠুন কিন্তু খুশিই হয়েছিলেন। অভিনেতার কথায়, অমিতাভ বড় বাজেটের ছবিতে অভিনয় করতেন, আর আমি ছোট বাজেটের ছবিতে করতাম। তবে দু’টো সিনেমাই বক্স অফিসে প্রায় সমান থাকতো। সেই জন্য মানুষ একসময় বলতে আরম্ভ করে মিঠুন এবং অমিতাভ হল ইন্ডাস্ট্রির দুই স্তম্ভ। বঙ্গ তনয় বলেন, এটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।
অনেকেই জানেন না, মিঠুন এবং অমিতাভের মধ্যে বক্স অফিসে লড়াই হলেও বাস্তব জীবনে তাঁরা কিন্তু ভীষণ ভালো বন্ধু। প্রায় সাড়ে চার দশকের পরিচয় এবং বন্ধুত্ব তাঁদের। ‘অগ্নিপথ’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন দুই অভিনেতা। ‘শেহেনশাহ’ অমিতাভকে চিরকাল শ্রদ্ধার চোখেই দেখেছেন বাংলার মিঠুন।