দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র (Mohiner Ghoraguli) অন্যতম স্তম্ভ তাপস দাস বাপি (Tapas Das Bapi)। অনুরাগীরা তাঁর আরোগ্য কামনা করে দিনরাত প্রার্থনা করছিলেন। কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হল না। রবিবার সঙ্গীত দুনিয়া থেকে আসে মন ভারাক্রান্ত করে দেওয়া এক খবর। শত চেষ্টা, শত প্রার্থনা সত্ত্বেও না ফেরার দেশে (Death) পাড়ি দেন তাপস দাস বাপি।
বাংলার প্রথম রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’। সেই ব্যান্ডের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন তাপস দাস বাপি। দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন ফুসফুসের ক্যান্সারে। তবে সেই ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য তাঁর কাছে ছিল না। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেকথা জানতে পেরেই প্রত্যেককে সাধ্য মতো সাহায্য করার আবেদন জানিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী রূপম ইসলাম।
রূপম অবশ্য একা নন, শ্রোতাদের তরফ থেকেও তাপস দাস বাপির চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছিল। এই খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্রই অবশ্য তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিজের কাঁধে তুলে নেয়। এসএসকেমে শুরু হয় সঙ্গীতশিল্পীর চিকিৎসা।
তবে শেষ রক্ষা হল না। কর্কটরোগের বিরুদ্ধে জীবনমৃত্যুর এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করতে বাধ্য হন তাপস দাস বাপি। সঙ্গীত, সুর, শ্রোতাদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা সবকিছু ফেলে রেখে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন তিনি। ফুসফুসের ক্যান্সারের তৃতীয় স্টেজে ছিলেন এই প্রবীণ সঙ্গীতশিল্পী। রবিবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তাপস দাস বাপির মৃত্যুসংবাদ জানতে পেরে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘তাপস দাসের (বাপিদা) মৃত্যুসংবাদে গভীরভাবে শোকাহত। বাংলার প্রথম রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। মারণরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। শিল্পীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের সরকার এসএসকেমে তাঁর চিকিৎসা সম্পূর্ণ খরচ বহন করছিল। শিল্পীর স্ত্রী সুতপা, তাঁর শোকাহত পরিবার ও ভক্তদের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানাই’।
শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও কোনও রাজনৈতিক দলের সাহায্য নিতে রাজি ছিলেন না তাপস দাস বাপি। শেষ পর্যন্ত চলতি বছর ৩ জানুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন শিল্পী। রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। শিল্পীর স্ত্রী সুতপা জানিয়েছিলেন, তাঁর ৪টি কেমো নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। সম্পূর্ণ তরল খাবার খেতেন তিনি। সবসময় রাইলস টিউব লাগিয়ে রাখতে হতো। তবে এই অবস্থাতেও গান আঁকড়ে ধরেছিলেন। রাইলস টিউব লাগিয়েই নানান অনুষ্ঠানে গান গাইতেন তিনি। শ্রোতারাও তাপস দাস বাপির আরোগ্য কামনা করছিলেন। কিন্তু সকল প্রার্থনা বিফলে পাঠিয়ে আজ না ফেরার দেশে পাড়ি দেন সঙ্গীতশিল্পী।