উত্তম কুমার (Uttam Kumar) নামটাই যথেষ্ট! গোটা বাংলার কাছে আজও তিনি জীবিত রয়েছেন তাঁর কালজয়ী সব সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের এই অভিনেতার সেই স্টারডমের কাছে আজও বাংলা সিনেমার আজকের প্রজন্মের অভিনেতারা।
উত্তম কুমার রুপালি পর্দায় আসা মানেই ঝড় উঠত অসংখ্য তরুণীর মনে। যদিও আজও তার ব্যতিক্রম হয় না। মৃত্যুর এতবছর পরেও তাঁর এভারগ্রীন হাসিতে আজও ফিদা হয়ে যায় বর্তমান প্রজন্মের যুবতীরাও। কাজেই বোঝা যাচ্ছে সময়ের থেকে ঠিক কতটা এগিয়ে ছিলেন বাঙালির এই মহানায়ক।
বরাবরই তারকা সুলভ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন উত্তম কুমার। তাই সাধারণ মানুষের ভীড়ে মিশে যাওয়ার থেকে তিনি অনেক বেশি পছন্দ করতেন সকলের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে। তখনকার সময় দাঁড়িয়েও স্টারডম ছিল আকাশছোঁয়া।
আসলে তিনি এমনই একজন তারকা ছিলেন যিনি তিনি রাস্তায় বেরোলে তাঁকে দেখার জন্য উপচে পড়ত সাধারণ মানুষের ঢল। বাংলা সিনেমার ইতিহাসে তাই উত্তম কুমার একজনই। তাঁর তুলনা তিনি নিজেই। একের পর এক জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দেওয়ার পাশাপাশি উত্তম কুমারের ছিল গাড়ির শখ।
তাই সেযুগেও মহানায়কের কালেকশনে ছিল একাধিক সব নামি দামি গাড়ি। জানা যায় ১৯৫৪ সালে প্রথম গাড়ি কিনেছিলেন তিনি। তাঁর কেনা প্রথম গাড়িটি ছিল কালো রঙের অস্টিন অফ ইংল্যান্ড। এরপর মহানায়কের শখের গাড়ির কালেকশনে যোগ হয় স্টিল রঙের অস্টিন সামারসেট।
এরপরে উত্তম কুমার যখন নামী তারকা তখন তিনি কিনেছিলেন ডজ কিংসওয়ে। জানা যায় উত্তম কুমারের অতিপ্রিয় এই গাড়ির উপরের দিকটা ছিল ক্রিম রঙের, আর তলার অংশটা ছিল গোলাপি রঙের। এই গাড়ি নিয়েই নাকি উত্তম কুমার নিজের পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে লং ড্রাইভে বেরিয়ে পড়তেন।
এরপরেই খুব শখ করে উত্তমকুমার কিনেছিলেন তখনকার বিশ্ববিখ্যাত র্যাম্বলার গাড়ি। তখনকার দিনের এই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িটি গোটা দেশে হাতে গোনা মাত্র কয়েকজনের কাছেই ছিল। আসলে ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় এমন শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি মানেই ছিল একটা বিরাট ব্যাপার। উত্তম কুমারের এই সাধের গাড়িটির রং ছিলো সবুজ, আর র্যাম্বলার লেখার ওপরে ছিল ক্রিম রং।
চুটিয়ে বেশ কিছুদিন এই গাড়িটি ব্যবহার করার পর উত্তম কুমার কিনেছিলেন সেকালের বিখ্যাত গাড়ি ইমপালা। গাড় নীল রঙের বিশালকার এই গাড়িটি বেশ কিছুদিন ব্যবহার করার পর তিনি কিনেছিলেন আইভরি ব্ল্যাক রঙের আমেরিকান ওল্ডস মোবাইল।
এর কিছুদিন পরে উত্তম কুমারের গাড়ির কালেকশনে যোগ হয় মরিস অক্সফোর্ড গাড়ি। এরপর বিদেশী গাড়ির থেকে ঝোঁক চলে যাওয়ায় মহানায়ক কিনেছিলেন বেশ কয়েকটি সাদা রঙের অ্যাম্বাসাডর গাড়ি।