আজ বাংলার এক অন্যতম প্রতিভাবান পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের (Rituparno Ghosh) মৃত্যুদিন (Death Anniversary)। দেখতে দেখতে আজ ‘ঋতু’ হীন বাংলা সিনেমা পা দিল ১০ বছরে। ২০১৩ সালের ৩০ মে বাংলা সিনেমা জগতে নেমে এসেছিল এক গভীর শোকের ছায়া। তবে কিংবদন্তী এই পরিচালক সশরীরে আজ আর আমাদের মধ্যে নেই ঠিকই, কিন্তু তিনি চিরকাল থেকে যাবেন তাঁর কাজের মধ্যে দিয়ে।
তবে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই পরিচালকের শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয় কোনোদিন। সময়ের বহু আগেই চলে গিয়েছেন বাংলা সিনেমা জগতের এই প্রতিভাবান পরিচালক। প্রসঙ্গত ঋতুপর্ণ ঘোষ বাংলার এমন পরিচালক ছিলেন যিনি বাংলা সিনেমাকে দেশের তো বটেই পৌঁছে দিয়েছিলেন বিশ্বের দরবারেও।
তাঁকে নিয়েই সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনে কলম ধরে ছিলেন বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় সুপারস্টার চক্রবর্তী। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমা বাড়িওয়ালিতে অভিনয় করেছিলেন চিরঞ্জিৎ। প্রসঙ্গত অনেকেই হয়তো জানেন অভিনয়ের পাশাপাশি একসময় সিনেমা পরিচালনাতেও হাত পাকিয়েছিলেন চিরঞ্জিৎ। সেই সময় তাঁর পরিচালিত ভয় সিনেমাটি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল দর্শকমহলে। এমনকি এই সিনেমাটি দেখে তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছিলেন খোদ ঋতুপর্ণ ঘোষ।
ঋতুপর্ণ নাকি চিরঞ্জিতের কাছে ফোন করে বলেছিলেন ‘ভয়’ তাঁর খুব ভালো লেগেছে। এরপর সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁদের বন্ধুত্ব। এরপর চিরঞ্জিৎ অভিনয় করেছিলেন ঋতুপর্ণ পরিচালিত বাড়িওয়ালিতে। এই সিনেমায় চিরঞ্জিতের পাশাপাশি অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় বলিউড অভিনেত্রী কিরণ খেরও। পরবর্তীতে ডাবিং করার সুবিধার জন্যই তাঁকে মুখে আঁচল দিয়ে কথা বলার স্টাইলটা শিখিয়ে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।
চিরঞ্জিতের কথায় জানা যায় পরে নাকি তাঁর হয়ে ডাবিং করেছিলেন রীতা কয়রাল। কিন্তু সিনেমাটি জাতীয় পুরস্কারে পাঠানো হবে বলে, বলা হয়েছিল কিরণই নাকি ডাবিং করেছেন। অন্যদিকে চিরঞ্জিৎ নিজেই ‘বাড়িওয়ালি’র জন্য ডাবিং করলেও সেটা বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। আর তাঁর কণ্ঠস্বর ডাব করানো হয় সব্যসাচী চত্রবর্তীকে দিয়ে।
তাই এদিন খানিক আফসোসের সুরেই চিরঞ্জিৎ বলেছেন ‘হয়তো আমারও জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ হারালাম’। সেইসাথে অভিনেতার সংযোজন ‘একটা সুযোগ ছেড়ে দিয়ে খুব বেশি কিছু হারালাম কি! আজকে এই কথাগুলো বলছি বটে, তবে ঋতুর প্রতি আমার এই নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই।’ এছাড়া এদিন সত্যিটা জানিয়ে চিরঞ্জিৎ বলেন ‘বাড়িওয়ালি’র পরেও ঋতুর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। তবে বন্ধুত্বটা আর সেই পর্যায়ে আর ছিল না। আসলে আমাদের বন্ধুত্বের গভীরতা আর সেই আগের মতো ছিল না।’।
এরপরেই অভিনেতা ঋতুপর্ণর সাথে নিজের সম্পর্কটা আরও খানিক স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন ‘এতটা পড়ে অনেকই হয়তো ভাবতে পারেন যে, আমি ঋতুর সমালোচনা করছি। এটা সমালোচনা নয়, এটা সত্য। আর আমার মনে হয়, আমার সঙ্গে ঋতুর সম্পর্কে সেই স্বচ্ছতা ছিল। তাই সত্যি কথাটা বলতে আমার কোনও ভয় নেই।’