ভারতীয় সংগীত জগতের (Indian Music Industry) মেলোডি কিং (Melody King) হলেন কুমার শানু (Kumar Sanu)। দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে তাঁর গাওয়া একাধিক সুপারহিট গানে সমৃদ্ধ হয়েছে ভারতীয় সংগীত জগত। যা আজও সংগীতপ্রেমীদের কাছে একেবারে নতুনের মত। প্রসঙ্গত তাঁরই পথ অনুসরণ করে খুব অল্প বয়স থেকেই গানের জগতের সাথে যুক্ত হয়েছেন কুমার শানুর মেয়ে শ্যানন কে’ও (Shannon K)।
যদিও তাঁর আসল নাম সানা ভট্টাচার্য (Sana Bhattacharya)। পেশার খাতিরেই নাকি নাম বদলে শ্যানন হয়েছেন তিনি। তবে শুধু গান বাজনায় নয় শানু কন্যা যুক্ত রয়েছেন অভিনয়ের সাথেও। তবে সবাইকে যেটা একেবারে চমকে দিয়েছে তা হল চলতি বছরের কান চলচ্চিত্র উৎসবে (Cannes Film Festival) শ্যাননের পদার্পণ। শানু কন্যা শ্যাননের মুকুটে এই নতুন পালক জোড়ার খবরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে নেটপাড়ায়।
জানা যায় ২০০১ সালে ১৬ই জুন মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কুমার শানুর মেয়ে। কিন্তু খুব ছোট বয়সেই অর্থাৎ মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই তিনি ব্রিটেনের বাসিন্দা। ছোট থেকে গান বাজনার প্রতি আকর্ষণ থেকেই মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য তিনি ভর্তি হয়েছিলেন লন্ডনের কলেজে। সেখানেই মাত্র চার বছর বয়সে প্রথম গান গাইতে শোনা যায় এই তারকা কন্যাকে। প্রসঙ্গত ব্রিটেনে যাওয়ার পরেই একটি ইংরেজী গান মুক্তি পায় শ্যাননের।
তবে কুমার শানুর মেয়ে হলেও বাংলা কিংবা হিন্দি ছবিতে কখনও গান গাইতে শোনা যায়নি তাঁকে বরং পপ সঙ্গীতশিল্পী হয়েই আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর। এই কারণেই ওয়াশিংটন ডিসি,জামাইকা এবং ট্রেন্টন-সহ বিদেশের নানান প্রান্তে গান গাইতে শোনা যায় তাঁকে। তবে এক পুরনো সাক্ষাৎকার কুমার শানুর মেয়ে জানিয়েছিলেন বিদেশের মাটিতে গিয়ে তাকে বর্ণ বৈষম্য নিয়ে কথা শুনতে হয়েছিল। তিনি যখনই গান শিখতে যেতেন তখনই তার গায়ের রং নিয়ে অনেকেই হাসিঠাট্টা করতেন।
এমনকি অডিশন দিতে গেলেও তাঁকে দেখা হতো অন্য চোখে। শ্যাননের কথায় ‘আমাকে সবসময় অন্যের চেয়ে আলাদা ভাবে দেখতেন সকলে। বারবার নিজেকে প্রমাণ করতে হতো শুধু গায়িকা হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে হতো আমাকে। অল্প বয়সে এত কিছু সামলাতে পারতাম না রোজ বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে কাঁদতাম’। এইভাবে লাগাতার বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়ে শ্যাননের শিশু মনে এতটাই প্রভাব পড়েছিল যে তাঁর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে গিয়েছিল। যার ফলে একসময় তিনি মানসিক অবসাদেরও শিকার হয়েছিলেন তিনি।
ইন্ডিয়া টুডে -কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে শ্যানন জানিয়েছিলেন সে সময় মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে তিনি নাকি নিজের ক্ষতি করারও চেষ্টা করেছিলেন। আর তার জন্য তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন আজকের যুগের সোশ্যাল মিডিয়াকে। মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী শ্যানন বহুবার নেতিবাচক মন্তব্যের মুখে পড়েছিলেন। সে সময় অন্যের মন্তব্য শুনে নিজেও কষ্ট পেতে পেতে ধীরে ধীরে ডুবে গিয়েছিলেন অন্ধকারের মধ্যে।
কিন্তু সেসময় ভাগ্যবশত শ্যাননের পাশে ছিলেন তাঁর পরিবার এবং কাছের বন্ধুরা। তবে এখন তিনি মনে করেন ‘প্রতিটি অন্ধকার সুরঙ্গের প্রান্তে আলো রয়েছে।’ তাই মন্তব্য শুনে মন খারাপ করার কোন অর্থ নেই’। কুমার শানুর এই মেয়েই এখন দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান করে থাকেন। ইতিমধ্যেই সংগীত জগতে তাঁর নিজস্ব অনুরাগী রয়েছে চোখে পড়ার মতো। তবে বর্তমানে তিনি কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল নিয়ে বেশ ব্যস্ত।