স্টার জলসার (Star Jalsha) জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘মেয়েবেলা’র (Meyebela) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বীথিকা মিত্র ওরফে বীথির চরিত্রে অভিনয় করছিলেন নামী অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী (Roopa Ganguly)। দর্শকমহলে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল তাঁর এই চরিত্র। কিন্তু আচমকাই সিরিয়াল ছেড়ে দেন রূপা। তাঁর জায়গায় আনা হয় অভিনেত্রী অনুশ্রী দাসকে। এরপর ‘মেয়েবেলা’ ছাড়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে বোমা ফাটান রূপা।
অভিনেত্রী সাক্ষাৎকারে বলেন, এই সময়ে দাঁড়িয়ে ‘মেয়েবেলা’য় যে অসভ্যতা দেখানো হচ্ছে তা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। সেই জন্য সিরিয়াল ছেড়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে এও বলেন, এই বিষয়ে তিনি চ্যানেলকে অনুরোধ করে বলেছিলেন, বীথি চরিত্রটিকে যেন এতখানি নেতিবাচকভাবে না দেখানো হয়। সেই অনুরোধ না রাখায় সিরিয়াল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
রূপার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কোনও জবাব দেয়নি। তবে এবার মুখ খুললেন ‘মেয়েবেলা’র চিত্রনাট্যকার (Writer)। তিনি যে শুধু মুখ খুলেছেন তাই নয়, এই বিষয়ে একাধিক অজানা তথ্যও সকলের সামনে এনেছেন। যা প্রকাশ্যে আসার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে।
‘মেয়েবেলা’র চিত্রনাট্যকার শুভময় বিশ্বাস (Subhamay Biswas) সম্প্রতি ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘নিজের চরিত্রের ব্রিফ জেনেই উনি রাজি হন বীথিকা মিত্রের ভূমিকায় অভিনয় করতে। তাহলে আজ হঠাৎ করে কী হলো? আজ উনি কেন বলছেন বীথি মৌয়ের প্রতি বড্ড নেগেটিভ?… মেয়েবেলা টেলিকাস্ট হতে শুরু করার একেবারে গোড়ার দিকে বীথি মৌয়ের জন্মদিন সেলিব্রেশনের সিকোয়েন্সে মৌকে প্রায় চড় মেরে বসে’।
‘মেয়েবেলা’র চিত্রনাট্যকার আরও লিখেছেন, ‘হাত ধরে হিড়হিড় করে টেনে নীচে নিয়ে আসে… এক্কেবারে শুরুর এপিসোডেই বীথি মৌকে অসভ্য মেয়ে বলে আখ্যা দেয়। মৌ যেন কোনও ভাবেই ডোডোর ছায়া না মাড়ায় সেই বক্তব্য পেশ করে। এই এত শত সো-কলড নেগেটিভ কাণ্ড কিন্তু বীথি শুরু থেকেই করে আসছে। তাহলে আজ হঠাৎ বীথি মৌয়ের প্রতি নেগেটিভ আচরণ করছে এই কথা উঠছে কেন?’।
শুভময়বাবুর সংযোজন, ‘এক মঙ্গলবার দুপুরে আচমকা শ্যুটিংয়ের মাঝপথে বললেন ওনার ভালোলাগছে না শ্যুটিং করতে। এটুকু বলে উনি বাড়ি চলে গেলেন। গোটা মেয়েবেলা ইউনিট, তার প্রত্যেকটা সদস্য কীই ভয়ানক বিপদের মুখে পড়লো উনি একবারও ভাবলেন না। সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে আমরা কী জবাব দেব সেকথা মনেও আনলেন না…। উনি কারোর কোনও কথা কানেই তুললেন না। পরের দিন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ, মেয়েবেলার মূল রচয়িতা, প্রযোজক, পরিচালক সবাই ম্যারাথন মিটিং করলেন ওনার সাথে, ওনার বাড়ি গিয়ে। উনি সিদ্ধান্ত নিলেন না। তখন আমরা জানি না বীথি হিসেবে উনি আছেন নাকি নেই? আমরা দোলাচলে’।
শুভময়বাবু জানান, এরপর প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রূপা গাঙ্গুলীকে ‘মেয়েবেলা’র পরবর্তী বেশ কিছু পর্বের কাহিনী লিখে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে বীথিকে ছাড়া এপিসোড চালানোর লড়াই চলছে। এই সিরিয়ালের মাধ্যমে ৭০-৮০ জন মানুষের সংসার চলে তাঁদের ভবিষ্যৎ তখন প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত ‘মেয়েবেলা’ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন রূপা। এখন তাঁর জায়গায় অনুশ্রী এই চরিত্রে অভিনয় করছেন। আস্তে আস্তে বীথি চরিত্রে দর্শকদের মন স্থান করে নিচ্ছেন তিনি। ‘মেয়েবেলা’র চিত্রনাট্যকারের প্রশ্ন, ‘আপনার জায়গায় অনুশ্রী দাস এলেন। শুধু এলেন না, এলেন, দেখলেন এবং মেয়েবেলাকে পুনরুজ্জীবিত করলেন। এটাই কি আপনার সত্ত্বাকে আঘাত করলো?’