জিঙ্গল (Jingle) গাওয়া নিয়ে সরগরম বাংলার সঙ্গীত জগত। সম্প্রতি বাংলার নামী গায়ক মনোময় ভট্টাচার্য (Manomoy Bhattacharya) এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন কখনও বিজ্ঞাপনের গান গাইবেন না। এবার একই সংবাদমাধ্যমের কাছে বিষয়টির বিরোধিতা করলেন নামী গায়িকা জোজো (Miss Jojo)। জিঙ্গল গাওয়া প্রসঙ্গে মনোময় যে মন্তব্য করেছেন তা তিনি সমর্থন করেন না তাও জানিয়েছেন গায়িকা।
সম্প্রতি বাংলার এক প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় মনোময় বলেছিলেন, ‘চানাচুর, সাবান, লোহালক্কড়-এর বিজ্ঞাপনে আমি গান গাইব না’। গায়কের এহেন মন্তব্যে অনেকেই বেশ ক্ষুব্ধ হন। সেই তালিকায় নাম রয়েছে জোজোরও। মিনু শাড়ি থেকে শুরু করে ডাটা মশলা- নব্বইয়ের দশকের বহু জনপ্রিয় জিঙ্গল এই গায়িকার গাওয়া। তাই স্বাভাবিকভাবেই মনোময়ের জিঙ্গল প্রসঙ্গে করা এই বক্তব্য বেশ গায়ে লাগে তাঁর।
একই সংবাদমাধ্যমের কাছে জোজো বলেন, ‘জিঙ্গল গাওয়া বেশ কঠিন কাজ। আপনি যদি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দর্শকদের ক্লিক না করাতে পারেন, তাহলে ব্যর্থ। জিঙ্গল গাওয়া কিন্তু কোনও অপরাধ নয়। তা সে সাবানেরই হোক বা চানাচুরের। এটাই আমার বক্তব্য’।
এখানেই অবশ্য থামেননি মিস জোজো। গায়িকা আরও বলেন, ‘মনোময়দার মতো একজন গুণী শিল্পীর এমন মন্তব্য করা একেবারেই ঠিক না। কোনও কাজই তো ছোট না। প্রত্যেক মানুষের পছন্দ-অপছন্দ থাকে। আমি নিজেকে যদি একজন প্লেব্যাক শিল্পী ভাবি, তাহলে প্রতিটা মুহূর্তে এত বেছে গান গাওয়া যায় না। তবে আমি এটাও মেনে নিচ্ছি যে অনেকে আইটেম সং গান না। আমি নিজেকে ভাগ্যমান মনে করি, আম্র ঝুলিতে যেগুলি এসেছে সেগুলির বেশিরভাগই হিট। সেই গানগুলিই আমায় স্থান করে দিয়েছে’।
মনোময় সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বলেছিলেন, তিনি ‘ক্লাসের’ জন্য গান করেন, ‘মাসের’ জন্য না। এই প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন জোজো। গায়িকা বলেন, সাধারণ জনগণই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। সাধারণ শ্রোতাদের যদি তাঁর গান পছন্দ না হতো তাহলে সঙ্গীত জীবনের ৪০ বছর সম্পূর্ণ করতে পারতেন না তিনি। জোজোর কথায়, ক্লাস এবং মাস এই দুই পছন্দ করলেই একজন শিল্পী হয়। তাঁর কথায়, ‘কোনও কাজই ছোট নয়। প্রত্যেক কাজেরই সম্মান পাওয়া উচিত। আমরা একজন মেথরকেও ছোট করতে পারি না। যে মানুষের মনুষ্যত্ববোধ রয়েছে তিনি কখনও অন্য আর একজন মানুষকে ছোট করবেন না’।
জোজো জানান, এই প্রসঙ্গে তাঁর মনোময়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে। গায়িকা বলেন, ‘মনোময়দা আমায় বলেছেন, তিনি কোনও শিল্পীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চাননি। কিন্তু এই ধরণের কোনও কথা শুনলেই মনে হয়, আমাদের কাজকে কি কেউ ছোট মনে করছেন!’