ভারতীয় সংগীত জগতের পপ কুইন (Pop Queen) ঊষা উত্থুপ (Usha Uthup। দেশের প্রথম মহিলা পপ শিল্পী (Female Pop Singer) হিসাবে এই গানের জগতে তার বয়স দেখতে দেখতে পার করেছে ৫০ বছর। দীর্ঘ এই পাঁচ দশক ধরে দেশে বিদেশে গান গেয়ে বিভিন্ন প্রজন্মের শ্রোতাদের মাতিয়ে রেখেছেন তিনি। বিশেষ করে একের পর এক সুপারহিট গান গেয়ে সমৃদ্ধ করে চলেছেন গোটা বলিউড (Bollywood) ইন্ডাস্ট্রিকে।
ঊষা উত্থুপের গান ছাড়া এক কথায় অসম্পূর্ণ ইন্ডাস্ট্রি। তবে শুধু গান নয় একাধিক সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন এই ‘হরি ওম হরি’র গায়িকা। বরাবরই আসলে ঊষা উত্থুপের কন্ঠই তার অন্যতম ইউএসপি। তাঁর গলায় রয়েছে এক অদ্ভুত জাদু। সেই গানের জাদুতে আজও মজে রয়েছেন আট থেকে৮০ সমস্ত প্রজন্মের শ্রোতা।
আসলে এই শিল্পী ঈশ্বর প্রদত্ত এমনই এক কণ্ঠের অধিকারী যা পুরনো হবেনা কোনদিন। আজ ৭৫ বছর বয়সে এসে তাঁর কাছে নাম-যশ-খ্যাতি কোন কিছুরই অভাব নেই। তবে শিল্পীর জীবনে এই সাফল্য কিন্তু রাতারাতি আসেনি। যার জন্য একসময় অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে গায়িকাকে। ভুল করেছেন, চোখের জল ফেলেছেন কিন্তু পড়ে গিয়েও বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর এক অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল তাঁর মধ্যে।
অর্থের প্রয়োজনে খুব অল্প বয়স থেকেই রোজগার করতে হয়েছিল এই খসখসে কণ্ঠস্বরের গায়িকাকে। সেসময় শাড়ি পড়েই নাইট ক্লাবে গান গাইতেন তিনি। জানা যায় সেখান থেকে ঊষা উত্থুপের সাথে পরিচয় হয় বলিউডের তৎকালীন এক জনপ্রিয় সুপারস্টারের। তিনি হলেন দেব আনন্দ (Dev Anand)। এ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারের গায়িকা জানান ‘দিল্লিতে নাইট এক ক্লাবে দেব আনন্দ আমার গান শুনতে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই দেখা হওয়াটা আমার জন্য বিশেষ ব্যাপার ছিল। খুবই উত্তেজিত ছিলাম’।
সেইসাথে বর্ষীয়ান এই সংগীত শিল্পীর সংযোজন ‘অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর তিনি আমায় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমি তাঁর ছবি ‘হরে রাম, হরে কৃষ্ণ’তে কাজ করব কি না।’ আসলে দেবানন্দ ভীষণ পছন্দ করতেন ঊষা উত্থুপের গায়কি এবং তাঁর কন্ঠ। এরপরে একে একে তিনি কাজ করেছেন রাহুল দেব বর্মন বাপ্পি লাহিড়ীর মত কিংবদন্তি সব সংগীত পরিচালকদের সাথে।
৫৩ বছরের গানের কেরিয়ারে তাঁর গানের ঝুলিতে রয়েছে কয়েক হাজার গান। অভিনয় করেছেন বিভিন্ন ভাষার ছবিতেও। তাঁর এই ভারী খসখসে অথচ তীক্ষ্ণ কণ্ঠস্বরই তাঁকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম জুড়ে বাকি সবার মধ্যে আলাদা করেছে। জানা যায় অমিতাভ বচ্চনের সাথেও খুব অল্প বয়সে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।