দীর্ঘদিন পর স্টার জলসার (Star Jalsha) ‘মেয়েবেলা’ (Meyebela) ধারাবাহিকের হাত ধরে পর্দার কামব্যাক করেছেন নামী অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী (Roopa Ganguly)। নায়ক ডোডোর মা বীথির (Bithi) চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। যদিও রূপার এই চরিত্র নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্কও চলছে। কেউ বলছে, নেশাগ্রস্তের মতো অভিনয় করছেন তিনি, কারোর আবার দাবি রিপার জন্যই সিরিয়াল দেখছেন না তাঁরা।
‘মেয়েবেলা’র নিয়মিত দর্শকরা জানেন, বীথি বৈবাহিক জীবনে সুখ পায়নি। সংসারের জন্য যাবতীয় আত্মত্যাগ করার পরেও বীথি স্বামী-শাশুড়ি কোনোদিন তাঁকে যোগ্য সম্মান দেয়নি। তবে জানলে অবাক হবেন, বীথির মতোই রূপার বৈবাহিক জীবনও সুখের ছিল না। তিন বার আত্মহননের চেষ্টাও করেছিলেন অভিনেত্রী। রূপা একবার নিজেই এই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন।
১৯৯২ সালে ধ্রুব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন রূপা। অভিনেত্রী স্বামী পেশায় ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বিয়ে বাঁচানোর জন্য একসময় অভিনয় ছেড়ে গৃহবধূ হয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন। সংসারে লেগে থাকতো নিত্যদিনের অশান্তি। সেই জন্য মানসিক অবসাদে চলে যান রূপা। একবার ইটাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন পর্দার বীথি।
‘মহাভারত’এ দ্রৌপদীর চরিত্র অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন রূপা। ‘মেয়েবেলা’ অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমার মনে হয়, একজন পুরুষের পক্ষে তারকা স্ত্রীকে মেনে নেওয়া খুব কঠিন। এর জন্য সেই মানুষটিকে অত্যন্ত মুক্তমনা হতে হয়। তবে আমি কখনও সকাল ৯টা এবং রাত ১০টার আগে কাজ রাখিনি। শ্যুটিং শেষ হওয়া মাত্রই মেক আপ না তুলেই বাড়ি ফিরে আসতাম। স্বামীকে খুশি রাখার জন্য একজন মেয়ের পক্ষে যা যা করা সম্ভব আমি সব করেছি। কলকাতায় ধ্রুবকে নিয়ে থাকার জন্য আমি অভিনয়টাও ছেড়ে দিই। কিন্তু এত কিছু করার পরেও আমি নিজের বিয়েটা বাঁচাতে পারিনি’।
কেরিয়ারের শীর্ষে থাকাকালীন অভিনয় ছেড়ে দিলেও তাঁর স্বামী তাঁকে আর্থিক সহায়তা করতে অস্বীকার করেন। তখনই সমস্যার সূত্রপাত হয়। এরপরই ফের কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নিজেকে চারবার কাজ থেকে সরিয়ে নিলেও ধ্রুব বদলাননি। রূপা বলেন, ‘আমি তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলাম। একবার ছেলের জন্মের আগে (রূপার পুত্র আকাশ ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন) এবং দু’বার পরে। তিনবারই আমি আত্মহত্যার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলাম। প্রথমবার ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিয়েছিলাম। তবে কোনও বার আমি সফল যিনি। ঈশ্বর হয়তো আসলে চেয়েছিলেন আমি আরও সহ্য করি’।
‘মেয়েবেলা’র বীথির কথায়, তিনি যখনই ধ্রুবর কাছে ডিভোর্সের কথা বলতেন, তখনই তিনি ক্ষমা চাইতেন। ২০০২ সাল থেকে একই জিনিস চলছিল। এরপর ২০০৫ সালে সঙ্গীতশিল্পী দিব্যেন্দুর প্রেমে পড়েন রূপা। দিব্যেন্দু রূপার থেকে ১৩ বছরের ছোট ছিলেন। রূপা এরপর ধ্রুবকে জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে সংসার করা আর সম্ভব হচ্ছে না।
এরপর মুম্বইতে এসে দিব্যেন্দুর সঙ্গে লিভ ইনে থাকা শুরু করেন রূপা। কিন্তু ২০০৯ সালে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন দু’জনে। প্রসঙ্গত, রূপার পুত্র আকাশ বাবার কাছেই মানুষ হয়েছেন। তবে ছেলের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী। যখনই মুম্বই থেকে কলকাতায় আসতেন তখনই ছেলের সঙ্গে দেখা করতেন তিনি।