একটা সময় বিশেষ করে ৯০ এর দশকে বাংলা সিনেমা গুলিতে নায়ক নায়িকা থেকে শুরু করে খলনায়কদের পাশাপাশি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতো সিনেমার শিশু শিল্পীদের। সেসময় রঞ্জিত মল্লিক থেকে শুরু করে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের একাধিক সিনেমাতে খুদে চরিত্রে নজর কেড়েছেন বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় শিশুশিল্পী। রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick) অভিনীত বিখ্যাত বাংলা সিনেমা শত্রুতে (Shatru) এমনই একজন অনাথ শিশুকে দেখে মন ভোরে গিয়েছিল দর্শকদের।
আশা করি এই সিনেমার সেই ছোট্ট ছোট্টুকে (Chottu) এখনও ভোলেননি দর্শক। সিনেমায় সেই ছোট্টু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মাস্টার তাপু (Master Tapu)। যদিও আট বছরের সেই অভিনেতা এখন আর সেই ছোট্টটি নেই। অতটুকু বয়সেই তাঁর সাবলীল অভিনয় মন জয় করে নিয়েছিল দর্শকদের। পর্দায় তাঁর অভিনয় এতটাই জীবন্ত ছিল যে তাঁর চোখে জল দেখলে দর্শকরাও হাউমাউ করে কেঁদে ফেলতেন।
দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবনে একাধিক সিনেমায় অভিনয় করলেও শত্রু সিনেমায় ছোট্টু চরিত্রের জন্যই দর্শকমহলে আজও তিনি দারুন জনপ্রিয়। বিশেষ করে শত্রু সিনেমায় তার ‘পুলিশ এই পুলিশ’ ডায়ালগটা আজও কিন্তু মনে রেখেছেন দর্শকরা।
জানা যায় এই ক্ষুদে শিল্পীর অভিনয়ের হাতে খড়ি হয়েছিল জনপ্রিয় পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরে। আসলে তাপুর বাবা নৃপেন দে ছিলেন টলিউডের একজন প্রযোজক। সেই সূত্রেই টলিপাড়ায় তার অবাধ যাতায়াত ছিল। তাপুর অভিনয়ে আসার গল্পটাও কিন্তু বেশ মজার।
জানা যায় সে সময় অঞ্জন চৌধুরীর শত্রু সিনেমার জন্য একজন শিশু শিল্পীকে খুঁজছিলেন। এমন সময় একদিন স্টুডিও পড়ায় বাবার সাথেই আসে তাপু। তারপর পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী তাকে আসন্ন শত্রু সিনেমার জন্য একনজরে পছন্দ করে নেন।
তারপর বাকিটা তো ইতিহাস। এরপর শিশুশিল্পী হিসাবে তিনি অভিনয় করেছেন ‘আশা ভালবাসা’, ‘একান্ত আপন’ এবং ‘প্রতিকার’র মতো সিনেমায়। তবে ছোটবেলায় শিশু শিল্পী হিসেবে তিনি যে পরিমাণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন বড় হয়ে তা ধরে রাখতে পারিনি। এখন সেই ভাবে পর্দায় অভিনয় করতে দেখা যায় না তাকে। জানা যায় যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে ফিল্ম স্টাডিজ নিয়ে একসময় পড়াশোনা করেছিলেন তিনি।