বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) অত্যন্ত উজ্জ্বল এক নক্ষত্র হলেন রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick)। তিনি যে কত আইকনিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। যদিও এখন কাজ অনেকটা কমিয়ে দিয়েছেন। বেছে বেছে হাতে গোনা কয়েকটি ছবিই করেন তিনি। পয়লা বৈশাখে রিলিজ করতে চলেছে অভিনেতার আগামী ছবি ‘লাভ ম্যারেজ’। তার আগে একটি নামী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় (Interview) বসেছিলেন তিনি।
সম্প্রতি নিজের বাড়িতে বসে অন্য সময়ের মুখোমুখি হন রঞ্জিত মল্লিক। অভিনেতাকে জিজ্ঞেস করা হয়, দীর্ঘদিন পর ‘লাভ ম্যারেজ’এর হাত ধরে পর্দায় ফিরছেন তিনি। এখন কীভাবে ছবি নির্বাচন করেন তিনি? জবাবে অভিনেতা বলেন, অভিনয় করা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরপর তরুণ মজুমদারের অনুরোধে আবার কাজ শুরু করেন। এখন রঞ্জিত মল্লিক দু’টি জিনিস দেখে ‘হ্যাঁ’ বলেন। এক, ছবির মাধ্যমে বার্তা দিতে পারছেন কিনা এবং দ্বিতীয়টি হল ছবিটি দেখে মানুষ প্রাণ খুলে হাসতে পারছে কিনা সেটা।
পাশাপাশি ‘শত্রু’ অভিনেতা এও স্বীকার করে নেন, একটি ছবি হিট হতে গেলে সবচেয়ে বেশি জরুরি হল একটি ভালো চিত্রনাট্য এবং সেই সঙ্গেই একজন যোগ্য পরিচালক। অভিনেতার কথায়, এই দু;টি জিনিস যদি না হয়, তাহলে সেই ছবিতে রঞ্জিত মল্লিল থাকুক, বা মিঠুন চক্রবর্তী, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কিচ্ছু যাবে আসবে না।
বাংলার এই নামী তারকাকে যারা চেনেন তাঁরা জানেন, তিনি এত বড় সুপারস্টার হওয়া সত্ত্বেও বরাবর মাটির কাছাকাছি থাকতে ভালোবেসেছেন। কীভাবে আজীবন এমনটাই রয়ে গেলেন তিনি? জবাবে রঞ্জিত বলেন, তাঁকে সুপারস্টার বলা হলে তাঁর ভীষণ অস্বস্তি হয়। অভিনেতার সংযোজন, ‘সব সময় মানুষের মাটি দিয়ে হেঁটে যাওয়াই ভালো। বেশি ওড়া কখনও ভালো না…। আমি মানুষকে ভালোবাসতে এবং তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পছন্দ করি’।
এই মুহূর্তে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা শোচনীয়। ওটিটি, টেলিভিশনের জনপ্রিয়তায় হলবিমুখ হয়ে উঠেছেন দর্শকরা। পাশাপাশি এখন বাণিজ্যিক ছবিকে কম গুরুত্ব দিয়ে অন্য ধারার ছবির দিকে ঝোঁকার একটা প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে দর্শকদের মধ্যে। এই জন্যই কি ভারসাম্য নষ্ট হয়ে ইন্ডাস্ট্রির এমন পরিণতি হল?
উত্তর দিতে গিয়ে রঞ্জিত মল্লিক সাফ বলেন, ‘আমি যেমন সমাজের উচ্চ শিক্ষিত মানুষদের কাছে কৃতজ্ঞ, তেমনই যারা চাষ করেন কিংবা মাছ ধরেন তাঁদের কাছেও কৃতজ্ঞ। কারণ তাঁরাই কিন্তু আমাদের খাইয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এই দু’পক্ষের ভালোলাগা কখনওই এক হতে পারে না। সেই জন্য সমাজের উচ্চ শিক্ষিত মানুষদের জন্য যেমন সিনেমা তৈরি করা দরকার, তেমনই আবার এই দ্বিতীয় পক্ষের মানুষদের বিনোদনের কথা ভেবে তাঁদের জন্যেও ছবি তৈরি করা জরুরি’।