ভারতীয় টেলিভিশনের ইতিহাসে অন্যতম কালজয়ী একটি মেগা সিরিয়াল ছিল স্টার প্লাসের বালাজি টেলিফিল্মসের ‘কিঁউ কি সাস ভি কভি বহু থি’ (Kyun Ki Saas Bhi Kabhi Bahu Thi)। দীর্ঘ আট বছর ধরে টেলিভিশনের পর্দায় রমরমিয়ে চলেছিল ১৮৩৩ পর্বের এই জনপ্রিয় মেগা সিরিয়াল। ধারাবাহিকে তুলসী বিরানীর (Tulsi Virani) চরিত্রে অভিনয় করেই দেশ জোড়া খ্যাতি পেয়েছিলেন অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti irani)।
তাই এই মেগা সিরিয়ালে স্মৃতি অভিনিত তুলসী চরিত্রটি আজও চোখে লেগে রয়েছে সিরিয়ালপ্রেমী দর্শকদের। মডেল,অভিনেত্রী এবং একইসাথে রাজনীতিবিদ তথা বর্তমানে কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু উন্নয়ন এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানীর আলাদা করে পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তবে অভিনেত্রীর জীবনের এই নাম-যশ-খ্যাতি একদিনে আসেনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে স্মৃতির স্মরণী বেয়ে অভিনয় জীবনের শুরুর দিনগুলোর পাতা উল্টে ছিলেন অভিনেত্রী। জানা যায় ২০০০ সালে প্রথম টেলি ধারাবাহিক ‘অতীশ’ এবং ‘হাম হ্যায় কাল অজ অর কাল’ ধারাবাহিকের হাত ধরেই অভিনয় জগতে হাতেখড়ি হয়েছিল স্মৃতির। এরপর শোভা কাপুরের বালাজি টেলিফিল্মসের ধারাবাহিক ‘কিঁউ কি শাস ভি কভি বহু থি’র তুলসীর চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় স্মৃতির।
কিন্তু জানলে হয়তো অবাক হবেন সে সময় ‘কিঁউ কি শাস ভি কভি বহু থি’ করার জন্য পর্দার তুলসী দৈনিক বেতন পেতেন মাত্র ১৮০০ টাকা। সে সময় অভিনেত্রীর জীবন একেবারেই তারকাসুলভ ছিল না। অভিনয়ে পা রাখার পরের বছরই পারসি ব্যবসায়ী জুবিন ইরানিকে বিয়ে করেছিলেন স্মৃতি। সে সময় তাঁদের হাতে পুঁজি ছিল মাত্র ৩০ হাজার টাকা।
সেই বছরের শেষেই অভিনেত্রীর কোল আলো করে আসে তাদের ছেলে জোহর। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে জোইশ নামে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন স্মৃতি। তবে এদিন অতীতের কথা বলতে গিয়ে নাম না করেই বালাজি টেলিফিল্মসের তৎকালীন প্রযোজক একতাকাপুরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন স্মৃতি।
সেই সময় তিনি নাকি জানতেন না তিনি অন্তঃসত্ত্বা। স্মৃতি জানান সেসময় শরীর খারাপ নিয়েই শুটিংকরেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রচন্ড অসুস্থ বোধ করায় তড়িঘড়ি অটো ধরে তিনি নিজেই গিয়ে পৌঁছেছিলেন হাসপাতালে। সেখানে পৌঁছে তিনি বুঝতে পারেন তাঁর রক্তপাত শুরু হয়েছে। এমন অনিচ্ছাকৃত গভপাতের পরদিন শুটিং থেকে একদিনের বিরতি চেয়েছিলেন স্মৃতি।
কিন্তু তা মেলিনি উল্টে বলা হয়েছিল ‘কোনও অসুবিধা নেই, তুমি প্রয়োজনে একটু দেরি করে এসো, ২টোর মধ্যে এসো।’ পুরোনো সেই ক্ষত আজও ভোলেননি অভিনেত্রী তাই এদিন তিনি বলেন ‘এর প্রমাণ হিসেবে নষ্ট হয়ে যাওয়া ভ্রূণ ওঁকে দেখানো উচিত ছিল!’ প্রসঙ্গত মুখে নাম না নিলেও বোঝাই যাচ্ছে স্মৃতির অভিযোগের তীর কিন্তু একতা কাপুরের দিকেই।