দেশের অন্যতম কিংবদন্তি গায়িকা (Musician) হলেন ঊষা উত্থুপ (Usha Uthup)। ভারতের সংগীত জগতের পপ কুইন (Pop Queen) তিনি। শহর কলকাতার (Kolkata) প্রতি এক অদ্ভুত টান রয়েছে তাঁর। বরাবরই কলকাতাকে বড্ড ভালোবাসেন উষা। তাই কলকাতার প্রথম অক্ষর অর্থাৎ ‘ক’ লেখা টিপ সারাক্ষণ জ্বলজ্বল করে তাঁর কপালে। এছাড়া তার গাওয়া ‘কলকাতা কলকাতা’ গান আজও কিন্তু সুপারহিট।
তাঁর গলায় রয়েছে এক অদ্ভুত জাদু সেই গানের জাদুতে আজও মজে রয়েছেন ৮ থেকে ৮০ সমস্ত প্রজন্মের শ্রোতা। আসলে ঈশ্বর প্রদত্ত এমনই এক গলার অধিকারী তিনি যা পুরনো হবেনা কোনদিন। অথচ এই গুণী শিল্পীকেই একসময় স্কুলের মিউজিক্যাল ক্লাস থেকে বার করে দিয়েছিলেন তাঁরই স্কুল শিক্ষক। আজকের ৭৫ বছর বয়সী ঊষা উত্থুপ সেদিন ছিলেন স্কুলের ছাত্রী।
সেই সময় তাঁর স্কুল শিক্ষকের মনে হয়েছিল সংগীতে তাঁর নাকি অতটাও দখল নেই। যার অন্যতম কারণ ছিল ঊষা উত্থুপের ভারী গলা। গত বছর কলকাতায় নিজের বায়োগ্রাফি ‘দ্য ক্যুইন অফ ইন্ডিয়ান পপ’-এর লঞ্চে এসে জীবনের সেই অজানা কথা নিজেই শেয়ার করেছিলেন গায়িকা। পুরনো দিনের সেই স্মৃতিরোমন্থন করেই ঊষা উত্থুপ জানান ‘আমার গানের টিচারের মনে হয়েছিল আমার গলা ভারি। গানের দলে আমাকে কোথায় রাখা হবে বুঝতে পারেননি তাঁরা। কারণ কোথাও আমার ভয়েস ফিট করছিল না’।
কিন্তু সে সময় নাকি ঊষা উত্থুপকে শুধুমাত্র মুখ থেকে শব্দ বার করতে বলা হয়েছিল। বাজানোর জন্য তাঁকে দেওয়া হয়েছিল ট্রায়েঙ্গল কিংবা ক্ল্যাপার্স। এ প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান সঙ্গীত শিল্পীর সংযোজন ‘সবাই বুঝেছিল যে আমি মিউজিক্যাল। কিন্তু গানটা আমার দ্বারা হবে না সেটা অনেকেই অনুমান করেছিলেন আমার শৈশবে। আমাকে ক্লাস থেকে ‘গেট আউট’ বলে বের করেও দিয়েছিলেন টিচার’। স্বাভাবিকভাবেই সেই সময় এই ঘটনায় খুব মন খারাপ হয়েছিল ছোট্ট ঊষার। খুব কষ্টও পেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু ভাগ্যের এমনই পরিহাস পরবর্তীতে তিনিই হয়ে ওঠেন দেশের অন্যতম নামজাদা সংগীত শিল্পী। শুদু তাই নয় পরবর্তীকালে গানের জগতে তিনি যখন বেশ নাম ডাক করেছেন সেসময় ওই শিক্ষকের সাথেই দেখা হয়েছিল গায়িকার।
দিল্লির অশোকা হোটেলে তিনি নাকি নিজেই এসেছিলেন ঊষা উত্থুপের গান শুনতে। টিচার সেদিন পুরনো ছাত্রীকে সামনাসামনি দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বুঝতে পেরেছিলেন নিজের ভুলও। ঊষা উত্থুপের কথায় ‘আমিও কেঁদে ফেলেছিলাম। আমি গেয়েছিলাম ‘টু স্যার উইথ লাভ’। তাকে সেদিন দেখে আমি খুব আনন্দ পেয়েছিলাম।