স্টারকিড মানেই তাঁর কাছে থাকবে সুখ, যশ, খ্যাতি, অর্থ, বছরের পর বছর ধরে এই ধারণাই চলে আসছে। কিন্তু এই ধারণা যে সবসময় সত্যি হয় না, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ হলেন ফারহা খান (Farah Khan)। বলিউড (Bollywood) প্রযোজক-পরিচালকের মেয়ে, অথচ তিনিই একসময় সপরিবার গুদামঘরে কাটিয়েছেন। আজকের প্রতিবেদনে ফারহার সংগ্রামের সেই অজানা কাহিনীই তুলে ধরা হল।
বি টাউনের এই নামী কোরিওগ্রাফার-পরিচালকের জন্ম ফিল্মি পরিবারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও লড়াই করে বলিউডে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই মুখোমুখি হয়েছে প্রচুর কঠিন পরিস্থিতির। কিন্তু তবুও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে গিয়েছেন। সম্প্রতি এক রিয়্যালিটি শো’য়ে এসে এই বিষয়ে মুখ খোলেন তিনি।
ফারহা এবং সাজিদ খানের পিতা কামরান ছিলেন বলিউডের প্রযোজক। ‘অ্যায়সা ভি হোতা হ্যায়’ নামের একটি বলিউড ছবির পরিচালনা করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গেই ছবি তৈরির সম্পূর্ণ খরচও তিনিই দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। সেই সঙ্গেই অথৈ জলে পড়েন ফারহার পিতা।
দেনার টাকা শোধ করতে গিয়ে সমস্ত গয়নাগাটি বিক্রি করে দেন কামরান। কিন্তু তবুও সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। শেষে নিজেদের মাথা গোঁজার আস্তানা, বাড়িটুকুও বিক্রি করে দেন। এই আঘাত সহ্য না করতে পেরে প্রয়াত হন ফারহা-সাজিদের পিতা। সংসারের সব দায়িত্ব এসে পড়েছিল দুই ভাইবোনের ঘাড়ে। ফারহা জানিয়েছেন, জীবনের একটা সময় টানা ৬ বছর পরিবারকে নিয়ে একটি ছোট গুদামঘরে কাটিয়েছেন তিনি।
কলেজে পড়ার সময়ই মাইকেল জ্যাকসনের ‘থ্রিলার’ মিউজিক ভিডিওটি দেখেছিলেন ফারহা। সেটি দেখেই নাচের প্রতি আগ্রহ বাড়ে তাঁর। নিজে থেকেই নাচ শিখতে শুরু করেন। বানিয়ে ফেলেন নিজের একটি নাচের দলও। ১৯৯২ সালে ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’ ছবির মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে কোরিওগ্রাফার হিসেবে পা রাখেন ফারহা। অজানা কারণে সরোজ খান সরে দাঁড়ানোয় সুযোগ পান ফারহা। প্রথম ছবিতেই নিজের কোরিগ্রাফির জন্য প্রশংসা আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
১৯৯২ সাল থেকে বলিউডে কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করার পর ২০০৪ সালে ডিরেক্টর হিসেবে পথচলা শুরু করেন ফারহা। শাহরুখ খান, সুস্মিতা সেন, জায়েদ খান, অমৃতা রাওকে নিয়ে তৈরি করেন সুপারহিট ‘ম্যায় হুঁ না’। এরপর ‘তিস মার খান’, ‘ওম শান্তি ওম’, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’এর মতো বহু হিট ছবি পরিচালনা করেন তিনি। পাশাপাশি বেশ কিছু ছবিতে অভিনয়ও করেছেন ফারহা। ‘শিরিন ফারহাদ কি তো নিকল পড়ি’ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে দেখা গিয়েছিল এই কোরিওগ্রাফার-ডিরেক্টরকে।