বিনোদন দুনিয়ার মানুষ (Celebrities) মানেই তাঁর জীবনটা হবে একেবারে ঝাঁ চকচকে। সেই জীবনে কোনও কষ্ট থাকবে না, শুধুই থাকবে আনন্দ- এমন ধারণা অনেকেরই থাকে। তবে সবসময় কিন্তু এমনটা হয় না। আর পাঁচজন সাধারণ মানুষদের মতোই তারকাদের জীবনেও প্রচুর কষ্ট থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সেগুলি পর্দার আড়ালেই থেকে যায়, অনেক সময় তা আসে প্রকাশ্যে।
সম্প্রতি যেমন স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছেন ঢালিউড (Dhallywood) এবং টলিউডের (Tollywood) এক নামী অভিনেত্রী। তিনি হলেন ‘রবীন্দ্রনাথ একানে কখনও খেতে আসেননি’ ওয়েব সিরিজের মুসকান জুবেরি অর্থাৎ অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন (Azmeri Haque Badhon)।
দুর্দান্ত অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনের নিরিখেও বহুবার সংবাদমাধ্যমের চর্চার কেন্দ্রে চলে এসেছেন বাঁধন। এই সুন্দরী অভিনেত্রী চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রী ছিলেন। তবে পারিবারিক সমস্যার জন্য অনেক সংগ্রাম করে পড়াশোনা চালাতে হচ্ছিল তাঁকে। ২০১০ সালে প্রথম সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পান। এরপর বেশ কয়েকটি টেলিভিশন সিরিজেও কাজ করেন পর্দার মুসকান জুবেরি। কাজের চাপের মধ্যেই বিয়েও করেছিলেন। তবে অভিনেত্রীর দাম্পত্য জীবন কিন্তু সুখের ছিল না।
বিয়ের পর স্বামীর প্রচুর অত্যাচার সহ্য করেছেন বাঁধন। একবার এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগও আনেন। তাঁদের একটি মেয়েও রয়েছে, নাম সায়রা। একমাত্র মেয়েকে নিয়েও প্রচুর সংগ্রাম করতে হয়েছে বাঁধনকে। ২০১০ সালে বিয়ের পর ২০১৪ সালে হঠাৎ করেই বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় বাঁধনের। অভিনেত্রীর স্বামীর তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং চরিত্রহীনতার অভিযোগ এনেছিলেন।
অপরদিকে বাঁধন অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীই তাঁকে মারধর করতেন এবং তাঁর ওপর অত্যাচার করতেন। মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান তিনি। যদিও মেয়ের জন্য প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্কই ছিল নায়িকার। তিনজন একসঙ্গে বিদেশেও ঘুরতে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, মেয়ের জন্যই আবার প্রাক্তন স্বামীকেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
তবে প্রাক্তন স্বামীকে ফের বিয়ের আগেই বাঁধন জানতে পারেন তাঁকে না জানিয়েই আর একবার বিয়ে করেছিলেন তাঁর স্বামী। এরপরই বিয়ের ইচ্ছা শেষ হয়ে যায় অভিনেত্রীর। শুরু হয় প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সংঘাত। তবে এত কিছু সত্ত্বেও বাঁধন কোনোদিন তাঁর মেয়েকে বাবার থেকে আলাদা করার চেষ্টা করেননি। তবে তা সত্ত্বেও মেয়েকে মায়ের ব্যাপারে ভুল বোঝাচ্ছিলেন তাঁর বাবা। শুধু এটুকুই নউ, মেয়েকে নিয়ে বিদেশে চলে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন অভিনেত্রীর প্রাক্তন স্বামী।
এই ঘটনার পরেই মেয়ের অভিভাবকত্ব চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বাঁধন। ৬ বছরের মেয়ের অভিভাবকত্ব নিয়ে আদালতের রায় অভিনেত্রীর পক্ষেই ছিল। তবে এত ঝড়ঝাপটার কারণে বাঁধন মানসিকভাবে বেশ ভেঙে পড়েছিলেন। যে কারণে তাঁকে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হচ্ছিল। তবে এখন অতীতকে পিছনে ফেলে নিজের কাজের মাধ্যমে পরিচিতি পাচ্ছেন অভিনেত্রী। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নামে একটি ছবির জন্য কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকেও ঘুরে এসেছেন তিনি। এখন ঢালিউডের মতোই টলিউডেও চুটিয়ে কাজ করছেন বাঁধন।