দেখতে দেখতে ১০ দিন হয়ে গেল টলিউডের নামী অভিনেত্রী (Tollywood actress) ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma) প্রয়াত হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন অভিনেত্রীকে নিয়ে শোক বিহ্বল পোস্টের সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। সবাই আস্তে আস্তে ফিরতে শুরু করেছেন নিজের স্বাভাবিক জীবনে। কিন্তু পারছেন না অভিনেত্রীর পরিবারের সদস্য এবং কাছের মানুষরা। এখনও তাঁর স্মৃতি আঁকড়ে বসে রয়েছেন বাবা উত্তম শর্মা, মা শিখা, দিদি ঐশ্বর্য, প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury) ও কাছের বন্ধুবান্ধবরা।
কুঁদঘাটের বাড়িতে এখনও তাঁকেই সর্বত্র খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁর বাবা-মা-কাছের মানুষরা। ডাকাবুকো মেয়েটাকে ছাড়া যে বাড়িটা বড়ই ফাঁকা। সম্প্রতি টিভি৯ বাংলার তরফ থেকে প্রয়াত অভিনেত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তখনই কান্না ভেজা গলায় মেয়ের স্মৃতিচারণ করেন তাঁরা। সেই সঙ্গেই জানান, ছোট মেয়ের বিয়ের পরিকল্পনাও শুরু করেছিল শর্মা পরিবার।
ঐন্দ্রিলার বাবা, পেশায় চিকিৎসক উত্তম শর্মা বলেন, তাঁরা কেউই এখনও পর্যন্ত মেয়েকে হারানোর শোক সামলে উঠতে পারেনি। অভিনেত্রীর স্মৃতির উদ্দেশে কিছু করেও উঠতে পারেননি তাঁরা। যদিও মুর্শিদাবাদে (ঐন্দ্রিলার বেড়ে ওঠা যেখানে) নায়িকার স্মৃতির উদ্দেশে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। অভিনেত্রীর বাবা বলেন, ‘এখন আমরা সবাই একে-অপরকে সামলানোর চেষ্টাটাই করছি মাত্র’।
সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতেই উঠে আসে সব্যসাচী এবং ঐন্দ্রিলার বিয়ের কথাও। উত্তমবাবু বলেন, ‘অনেককিছুই তো ভেবেছিলাম। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার বিয়েটা দিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। সব্যসাচীর বাবার সঙ্গেও এই নিয়ে কথা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, আমাদের বাড়িতে এসে এই নিয়ে কথা বলবেন’।
কথা বলতে বলতেই ঐন্দ্রিলার বাবা ফোনটা ধরিয়ে দেন অভিনেত্রীর মা’কে। শিখাদেবী বলেন, ‘আমায় মেয়ে আর সব্যসাচী ছিল একেবারে হরিহর আত্মা। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ওঁদের বিয়ের একটা পরিকল্পনা করেছিলাম। এখন সবাই বলছে ঐন্দ্রিলা ছিল… এর মধ্যেই সবকিছু অতীত হয়ে গিয়েছে’।
মেয়েকে নিয়ে কথা বলতে বলতে ধরে আসে ঐন্দ্রিলার মায়ের গলা। শিখাদেবীর কান্না পেলেও নিজেকে সামলে নেন এই ভেবে যে মেয়েটা কষ্ট পাবে। তাঁর জন্য মা-বাবা চোখের জল ফেলুক কোনোদিন চাইতেন না ঐন্দ্রিলা, জানান শিখাদেবী। তবে মেয়েকে হারানোর ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেননি তাঁরা। দু’চোখের পাতা এক করলেই ভেসে আসছে ঐন্দ্রিলার শারীরিক যন্ত্রণার সব ছবি। সব শেষে শিখাদেবীর প্রশ্ন, ‘আমাদের পরিবারের প্রাণ ছিল ও। আমাদের মেরুদণ্ড ছিল। এখন কী নিয়ে থাকব আমরা?’