বলিউড অভিনেত্রীদের (Bollywood actress) ঝাঁ চকচকে জীবনযাত্রা দেখে প্রত্যেকেই ভাবেন তাঁদের তো কষ্টই নেই! জীবনটা যেন একেবারে রূপকথার মতো। অনুরাগীরা আঁচও করতে পারেন না ওই হাসিমুখগুলির পিছনেই হয়তো লুকিয়ে রয়েছে কত অজানা কষ্ট। বলিউডের ‘ডিম্পল ক্যুইন’ প্রীতি জিন্টাও (Preity Zinta) এমনই একজন ব্যক্তিত্ব, যার জীবনটাও অনেক সংগ্রামে ভরা।
প্রীতির নাম শুনলেই দর্শকদের হয়তো সবার আগে মনে পড়বে তাঁর ভুবন ভোলানে হাসি। টোল পড়া ওই হাসিতে যে কত মানুষ মন হারিয়েছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। এখন অবশ্য বলি সুন্দরী প্রবাসিনী হয়ে গিয়েছেন। স্বামী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে বিদেশে থাকেন তিনি।
তবে বলিউড থেকে দূরে সরে গেলেও প্রীতিকে নিয়ে অনুরাগীদের আগ্রহ কিন্তু একটুও কমেনি। সম্প্রতি যেমন তাঁর জীবনের একটি অজানা কাহিনী প্রকাশ্যে এসেছে। যা শোনার পর একদিকে যেমন তাঁর প্রতি অনুরাগীদের শ্রদ্ধা বেড়ে গিয়েছে, তেমনই আবার চোখে জলও এসেছে।
প্রীতির মুখের ওই মিষ্টি হাসির পিছনেই রয়েছে প্রচণ্ড কষ্ট। ছোটবেলা থেকে কত সংগ্রাম করে যে অভিনেত্রী আজ এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। প্রীতির বয়স যখন মাত্র ১৩, তখন এক ভয়ঙ্কর সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর পিতা দুর্গানন্দ জিন্টার। তিনি পেশায় ছিলেন ভারতীয় সেনা অফিসার।
শুধু এটুকুই নয়, সেই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন প্রীতির মা নীলপ্রভা জিন্টাও। তিনি টানা ২ বছর শয্যাশায়ী ছিলেন। এই ঘটনাই বদলে দিয়েছিলেন অভিনেত্রীর সম্পূর্ণ জীবন। কম বয়স থেকেই প্রীতি মডেলিং শুরু করেন। সেখান থেকেই বিজ্ঞাপনে কাজের সুযোগ পান। এরপর তাঁর সামনে খুলে যায় বলিউডের দরজা। ব্যস, এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি অভিনেত্রীকে।
অল্প সময়ের মধ্যেই ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ স্থানীয় অভিনেত্রীদের তালিকায় নিজের নাম তুলে নেন প্রীতি। কিন্তু এত সফল হলেও অল্প বয়সে বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা কোনোদিন ভুলতে পারেননি তিনি। সেই কারণেই ২০০৯ সালে নিজের জন্মদিনের দিন হৃষীকেশ থেকে ৩৪ জন অনাথ শিশুকে দত্তক নেন প্রীতি। প্রত্যেক শিশুর মা তিনি। প্রতি বছর নিয়ম করে নিজের এই ৩৪ ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বলিউড অভিনেত্রী। প্রীতি যে ভালো অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি দুর্দান্ত মনের মানুষও তা তাঁর এই সিদ্ধান্ত থেকেই বেশ বোঝা যায়।