১ টাকায় এখন তো আর কিছুই হয় না- এই কথা আমরা প্রায়শয়ই শুনে থাকি। কিন্তু যদি বলি এই ১ টাকা (1 rupees) দিয়েই মাংস-ভাত, মাছ-ভাত থেকে শুরু করে বিরিয়ানি সব কিছু পেয়ে যাবেন- তাহলে বিশ্বাস করবেন? যদি বিশ্বাস নাও হয়, তাহলে কিন্তু বিষয়টা একেবারেই সত্যি। এই পশ্চিমবঙ্গের একটি শহরেই মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে বিরিয়ানি (Biryani), মাংস-ভাত, মাছ-ভাত পাওয়া যাচ্ছে। তাও আবার একেবারে ভরপেট।
যেমন স্বাদ, তেমনই গন্ধ, এক কথায় অতুলনীয়। অথচ দাম মাত্র ১ টাকা। সম্প্রতি সাধারণ মানুষদের জন্য এমনই একটি পরিষেবা চালু করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেখানে প্রত্যেকদিন আলাদা আলাদা মেনুও থাকে। যেদিন মেনুতে যে খাবার থাকবে সেটিই খেতে পারবেন মাত্র ১ টাকায়।
১ টাকার বিরিয়ানি কিংবা মাংস-ভাত যদি আপনি খেতে চান, তাহলে চলে যেতে হবে উত্তর ২৫ পরগনায়। সেই জেলায় বারাসাতে সম্প্রতি চালু হয়েছে এই ব্যবস্থা। বারাসাত হাসপাতালের বাইরে ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই শুরু হয়েছে এই পরিষেবা। ওখানেই রয়েছে এই ভ্রাম্যমান ক্যান্টিনটি।
এখন ২০০ থেকে ২৫০ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। আগে প্রত্যেক দিনই খোলা থাকত এই ক্যান্টিন। তবে এখন অবশ্য রবিবার বন্ধ রাখা হয়। প্রধানত বারাসা হাসপাতালের রোগী এবং তাঁদের পরিবার-পরিজনদের জন্য এই পরিষেবা চালু করা হয়েছিল। তবে এখন সাধারণ মানুষদের জন্যও চালু করে দেওয়া হয়েছে এটি।
সোম থেকে শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত খাবার সরবরাহ করার ব্যবস্থা চালু থাকত। তবে ভ্রাম্যমান কাউন্টার শুরু হওয়ার পর থেকে আধ ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে যায় সকল খাবার। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার চেয়ারম্যান মিঠু চৌধুরী জানিয়েছেন, এখন প্রায় ২৫০ জন মানুষের খাবারের বন্দোবস্ত করা হলেও আগামী দিনে সেটি বাড়িয়ে ১০০০ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সপ্তাহে ৬ দিন ভিন্ন ভিন্ন ধরণের খাবার থাকে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মেনুতে। কোনোদিন থাকে নিরামিষ খাবার, আবার কোনোদিন থাকে মাছ-ভাত কিংবা মাংস ভাত। আর ১ দিন থাকে বিরিয়ানি। হাসপাতালের বাইরে আসা রোগীর পরিবারের মানুষরা অনেক সময় না খেয়েই দিন কাটাতেন। তাঁদের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্যই এই ১ টাকার বিনিময়ে খাবার তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়।
এত নামমাত্র মূল্যে খাবার পাওয়া গেলেও গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও স্থান নেই। ক্রেতারা বলেন, যথেষ্ট ভালো মানের খাবার দেওয়া হয়। এছাড়াও যদি পরে চাওয়া হয় তাহলে অতিরিক্ত কোনও মূল্য ছাড়াই খাবারও দেওয়া হয়। এই পরিষেবার মাধ্যমে যে কত মানুষ উপকৃত হয়েছেন তা ক্যান্টিনের বাইরের ভিড় দেখলেই বোঝা যায়।