দুবার ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয় লাভ করা মোটেই সহজ নয়। তবে সেই অসাধ্য সাধন করেন ফিনিক্স পাখির আখ্যা পেয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা (Aindrila Sharma)। এরপর যখন ব্রেন স্ট্রোক হয় তখনও সকলের আশা একটাই ঠিক ফিরবে ঐন্দ্রিলা। কিন্তু এবারে আর হল না। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই দীর্ঘ ২০ দিনের লড়াইয়ে ইতি টানলেন অভিনেত্রী। জন্মদিনের কয়েকমাস আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
ছোট থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল বহরমপুরের মেয়ে ‘মিষ্টি’র। ১৯৯৮ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি জন্ম হয়েছিল ঐন্দ্রিলার। বাবা উত্তম শর্মা মুর্শিদাবাদের হাসপাতালের চিকিৎসক ও মা শিখা শর্মা এক নার্সিং হোস্টেলের ইন-চার্জ। অভিনয়ের ইচ্ছা থাকলেও প্রথাগত শিক্ষায় কোনো কমতি ছিল না। কলকাতার এক বেসরকারি কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা শেষ করে উঠতে পারেননি।
২০১৫ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি জন্মদিনেই জানতে পারেন ক্যান্সার আক্রান্ত তিনি। তবে হাল ছাড়েননি, জীবনের যুদ্ধে দাঁতে দাঁত দিয়ে লড়াই করেছেন আর জিতেছেন। দিল্লির এইমসে বোন ম্যারো বা অস্থিমজ্জার ক্যান্সারের চিকিৎসা চলেছিল। দেড়বছর পর সুস্থ হয়ে ফেরেন তিনি। এরপর টলিউডে পা রাখেন। ২০১৭ সালে ‘ঝুমুর’ সিরিয়ালে ছোটপর্দায় হাতেখড়ি। প্রথম সিরিয়ালের দারুন জনপ্রিয়তা পান তিনি।
ঠিকই চলছিল ২০২১ পর্যন্ত। কিন্তু আবারও জন্মমাস ফেব্রুয়ারিতেই ডান কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয়। জানা যায় আবারো ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। তবে এবারেও অদম্য মনের জোর নিয়ে লড়াই করে সুস্থ হয়ে ফিরলেন ঐন্দ্রিলা। সকলকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এভাবেও ফিরে আসা যায়। সুস্থ হয়ে আবারও কাজে ফেরেন ঐন্দ্রিলা। সেই সময় মেক জানিয়েছিলেন নিজের স্বপ্নের কথা। সমাজের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন, ইচ্ছা শীল বহরমপুরে অনাথ আশ্রম তৈরির।
তবে এই লড়াইও শেষ লড়াই ছিল না। গত ১লা নভেম্বরের রাতেই আবারও হয় ছন্দপতন। ব্রেন স্ট্রোক হয় ঐন্দ্রিলার। আবারও শুরু হয় যুদ্ধের। ২০ দিন ধরে এক নাগাড়ে লড়াই করে চললেন ঐন্দ্রিলা। সাথে লড়ল একটা গোটা হাসপাতাল। পাশে পেয়েছিলেন ছায়া সঙ্গী সব্যসাচী, পরিবার থেকে শুরু করে হাজারো অনুগামীদের। কিন্তু শনিবার রাতে একেরপর এক ১০ বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে, তারপর রবিবার দুপুরে খবর আসে যুদ্ধ শেষ।