আশি-নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশনের একাধিক চ্যানেলের পথচলা শুরু হয়েছিল। সেই তালিকায় নাম ছিল দূরদর্শনেরও। শুরুর দিকে আট থেকে আশি প্রত্যেকের কথা মাথায় রেখে টেলিভিশন শোগুলি বানানো হতো। প্রায় প্রত্যেকটিরই কনটেন্ট হতো পারিবারিক। আর সেই কারণেই কূটকচালি-পরিকীয়ার কাহিনীতে ভরা এখনকার সিরিয়ালের যুগে পুরনো সেই ধারাবাহিকগুলিকে প্রচণ্ড মিস করেন দর্শকরা। আজকের প্রতিবেদনে হিন্দি টেলিভিশনের এমনই ১০ শোয়ের (Television show) নাম তুলে ধরা হল যেগুলি এত বছর পরেও দর্শকদের বিচারে সেরা।
রামায়ণ (Ramayan)- রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’এর নাম তালিকার শীর্ষে রয়েছে। শোনা যায়, সেই সময় এই শোয়ের জনপ্রিয়তা এতটাই বিপুল ছিল যে সেই সময়টুকু সম্পূর্ণ রাস্তাঘাট খাঁ খাঁ করত। প্রত্যেকে হাঁ করে টেলিভিশনের পর্দার সামনে ‘রামায়ণ’ দেখতে বসে পড়তেন। করোনা সংক্রমণের সময়েও ফের শুরু হয়েছিল এই শোয়ের সম্প্রচার। তখনও দর্শকরা ‘রামায়ণ’কে প্রচণ্ড ভালোবাসা দিয়েছিলেন।
মহাভারত (Mahabharat)- তালিকায় নাম রয়েছে বি আর চোপড়ার কালজয়ী ‘মহাভারত’এরও। ‘রামায়ণ’এর মতোই যখন এটিও সম্প্রচারিত হতো, তখন রাস্তাঘাট-দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যেত। পরিবারের সঙ্গে বসে সবাই ‘মহাভারত’ দেখতেন।
শক্তিমান (Shaktimaan)- মুকেশ খান্না অভিনীত এই শো ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সম্প্রচারিত হয়েছে। এদেশের প্রথম সুপারহিরো শক্তিমান। ছোটদের কথা মাথায় রেখে তৈরি হওয়া এই ধারাবাহিক বড়দেরও প্রচণ্ড পছন্দের ছিল।
শরারত (Shararat)- হাসির এই ধারাবাহিকটি দিদিমা-মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল। এই তিনজন ছিলেন আসলে পরী। তাঁদের নানান দুষ্টুমি এবং জাদুই দেখানো হতো ‘শরারত’এ। জিয়া, রাধা, সুরজ এবং জিয়ার দিদিমার গল্প এখনও মনে গেঁথে রয়েছে অনেকের।
শান্তি (Shanti)- ১৯৯৪ সালে দূরদর্শনে সম্প্রচার শুরু হয়েছিল ‘শান্তি’র। এখনও পর্যন্ত টেলিভিশনের সবচেয়ে বেশি দেখা ধারাবাহিকের শিরোপা রয়েছে ‘শান্তি’র মাথায়। মন্দিরা বেদী অভিনীত এই ধারাবাহিকটি সেই সময়েও প্রচণ্ড জনপ্রিয় ছিল। এর জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখেই ২০০৯ সালে স্টার প্লাসে ফের পুনঃসম্প্রচার শুরু হয়েছিল ‘শান্তি’র।
ব্যোমকেশ বক্সী (Byomkesh Bakshi)- এই ধারাবাহিকের হাত ধরে বাঙালির আবেগ ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ সারা দেশের আবেগে পরিণত হয়েছিল। ব্যোমকেশের চরিত্রে রজত কাপুর এবং অজিতের চরিত্রে কে কে রায়নাকে এখনও মনে আছে দর্শকদের। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই ধারাবাহিকটি দূরদর্শনে বহুবার পুনঃসম্প্রচারিত হয়েছে।
মালগুড়ি ডেইজ (Malgudi Days)- আর কে নারায়ণের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হওয়া এই ধারাবাহকটি ছোটদের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৮৭ সালে সম্প্রচারিত এই শোয়ে মাস্টার মঞ্জুনাথের অভিনয় দেখে কার্যত মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন দর্শকরা।
সিআইডি (CID)- ১৯৯৭ সালে প্রথম এই শোয়ের জনপ্রিয়তা শুরু হয়েছিল। এখনও ‘সিআইডি’র জনপ্রিয়তা দর্শকদের মধ্যে দেখার মতো। এসিপি প্রদ্যুম্ন, অভিজিৎ, ফয়াকে এক ডাকে চেনে সবাই। দর্শকদের কাছে ‘সি আইডি’ একটি শো নয়, আসলে একটি আবেগ।
লেফট রাইট লেফট (Left Right Left)- সেই সময়কার অন্যতম হিট শো ছিল এটি। ‘লেফট রাইট লেফট’এর প্রত্যেক শিল্পীর জনপ্রিয়তাই ছিল দেখার মতো। বিশেষ করে নয়না এবং রাজীবের গোপন সম্পর্ক বেশ পছন্দ ছিল দর্শকদের।
ফ্লপ শো (Flop Show)- তালিকার শেষ নামটি হল ‘ফ্লপ শো’র। নামে ফ্লপ হলেও আদতে এই শো ছিল সুপারডুপার হিট।
কমেডি ঘরানার এই সিরিজ দেখে দর্শকদের হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে যেত। দূরদর্শনে সম্প্রচারিত হওয়ার পর আরও বেশ কয়েকটি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়েছে ‘ফ্লপ শো’।