প্রাক্তন ‘মিস ইন্ডিয়া’ (Miss India) লীলা নায়ডু (Leela Naidu) একসময় বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন ছিলেন। বিশেষত তাঁর সৌন্দর্য নিয়ে চর্চা লেগেই থাকত। শুধু তাই নয়, টানা ১০ বছর বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলাদের লিস্টেও নিজের স্থান ধরে রেখেছিলেন তিনি।
তবে প্রত্যেকে লীলার সৌন্দর্য দেখলেও অনেকেই হয়তো তাঁর সুন্দর মুখের পিছনে লুকিয়ে থাকার কষ্টটা জানেন না। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ‘মিস ইন্ডিয়া’ খেতাব জেতার পর বদলে যায় লীলার ভাগ্য। বলিউড থেকে আসতে থাকে একের পর এক অফার। কিংবদন্তি রাজ কাপুর বহুবার তাঁকে নিজের ছবির নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু পড়াশোনার খাতিরে বারবার সেই অফার ফিরিয়ে দিতেন প্রাক্তন ‘মিস ইন্ডিয়া’।
কিন্তু শেষে ঋষিকেশ মুখার্জির প্রস্তাব আর ফেরাতে পারেননি লীনা। ঋষিকেশের ছবির জন্য শেষ পর্যন্ত হ্যাঁ বলে দেন তিনি। লীলার প্রথম ছবিই দারুণ হিট হয়েছিল। সেই ছবির জন্যই জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। এরপরই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি অভিনেত্রীকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত লীলার কেরিয়ারের শুরুটা যেমন হয়েছিল, শেষটা তত মধুর হয়নি।
‘মিস ইন্ডিয়া’ খেতাব জেতার ৩ বছর পর অর্থাৎ মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন লীলা। লাক্সারি ওবেরয় হোটেল চেনের মালিক মোহন ওবেরয়ের ছেলে তিলক রাজের সঙ্গে সাত পাক ঘুরেছিলেন তিনি। তিলক লীলার থেকে বয়সে ১৬ বছরের বড় ছিলেন। বিয়ের দু’বছরের মধ্যেই ২ মেয়ের জন্ম দেন বলিউড অভিনেত্রী। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁর বিয়ে বেশিদিন টেকেনি। মেয়েদের কাস্টডিও তিলক পেয়ে যান। এরপর বলিউডে পা রাখেন লীলা।
নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে না হলেও সৌন্দর্যের মাধ্যমে দর্শকদের মনে দাগ কেটেছিলেন প্রাক্তন ‘মিস ইন্ডিয়া’। ধীরে ধীরে প্রথম বিয়ের কষ্ট ভুলে দ্বিতীয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ডোম মোরিয়স নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সাত পাক ঘুরেছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই বিয়েও টেকেনি বেশিদিন। এই ধাক্কাটাই মেনে নিতে পারেননি লীলা। সবকিছু ছেড়ে কোলাবায় নিজের পুরনো বাড়িতে চলে যান অভিনেত্রী। আস্তে আস্তে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিজের পুরো বাড়ি ভাড়া দিয়ে দেন তিনি।
তবে তা সত্ত্বেও অভাব ছিল লীলার নিত্যসঙ্গী। শেষে অভাব এবং একাকীত্বে ভুগতে শুরু করে মদ্যপানে ডুবে যাব অভিনেত্রী। সময়ের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরনোও বন্ধ করে দেন তিনি। শুরুর দিকে লীলার সঙ্গে দেখা করতে কিছু আত্মীয় আসলেও, পরে তাঁদের সঙ্গে দেখা করাও বন্ধ করে দেন। শেষে ২০০৯ সালে ২৮ জুলাই ফুসফুস বিকল হয়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর। একসময় খ্যাতির শীর্ষে থাকা লীলার যে এমন পরিণতি হবে তা সত্যিই কেউ ভাবেনি।