দেখতে দেখতে ৬ দিন অতিক্রান্ত হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। গত মঙ্গলবার রাতে আচমকাই খবর এসেছিল এসেছিল ব্রেন স্ট্রোকে (Brain Stroke) আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ‘জীয়ন কাঠি’ সিরিয়ালের নায়িকা। সেই থেকেই গোটা বাংলার মানুষ প্রার্থনা করে চলেছেন ঐন্দ্রিলার ফিরে আসার।
এরইমধ্যে সোমবার অর্থাৎ গতকালই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে মিলেছিল সুখবর। জানা গিয়েছিল শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে ঐন্দ্রিলার। এই খবর মেলার কিছুক্ষণ পরেই সন্ধ্যের দিকে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মধ্যে দিয়ে এই খবরে শিলমোহর দিয়েছেন ঐন্দ্রিলার প্রেমিক তথা অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)।

এদিন ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খবর (Health Update) জানিয়ে সব্যসাচী লিখেছেন ‘হাসপাতালে ছয় দিন পূর্ণ হলো আজ, ঐন্দ্রিলার এখনও পুরোপুরি জ্ঞান ফেরেনি। তবে ভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, শ্বাসক্রিয়া আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে, রক্তচাপও মোটামুটি স্বাভাবিক। জ্বর কমেছে। ওর মা যতক্ষণ থাকে, নিজের হাতে ওর ফিজিওথেরাপি করায়, যত্ন নেয়। বাবা আর দিদি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে’।
সব্যসাচী জানিয়েছেন হাসপাতালে রোজ রাতে তাঁর দুই বন্ধু সৌরভ আর দিব্য তাঁর সাথে থাকতে আসে। এরপরেই সব্যসাচী জানিয়েছেন তাঁর উপস্থিতিতে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ঐন্দ্রিলা। সব্যসাচীর কথায় ‘আমি দিনে তিনবার করে গল্প করি ঐন্দ্রিলার সাথে। গলা চিনতে পারে, হার্টরেট ১৩০-১৪০ পৌঁছে যায়, দরদর করে ঘাম হয়, হাত মুচড়িয়ে আমার হাত ধরার চেষ্টা করে। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম, এখন বুঝি ওটাই ফিরিয়ে আনার এক্সটার্নাল স্টিমুলি’।
একই কথা জানিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে ঐন্দ্রিলার মা শিখা দেবী বলেছেন ‘সব্যসাচীর যে কোনও কথায় খুব ভাল সাড়া দিচ্ছে ঐন্দ্রিলা। ওর হৃদ্পিণ্ডের স্পন্দনের হার এবং শরীরে অক্সিজেনের মাত্রার হেরফের হচ্ছে সব্যসাচীর আসা-যাওয়ায়।’ তবে সেইসাথে তিনি জানিয়েছেন এখনও জ্ঞান ফেরেনি ঐন্দ্রিলার। জানা যাচ্ছে অভিনেত্রীর শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ‘স্টিমুলেটিং থেরাপি’ দেওয়া হচ্ছে। অভিনেত্রীর মায়ের কথায় এই থেরাপির মধ্যে দিয়ে, ‘‘ওর দিদি, বাবা ওর পাশে গিয়ে ওর ছোটবেলার গল্প করছে। ওর সঙ্গে কাটানো বিভিন্ন মুহূর্তগুলি নিয়ে কথা বলছে। চিকিৎসকেরা আশা দিচ্ছেন।’’

প্রসঙ্গত গতকাল ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খবর দেওয়ার পাশাপাশি এদিন ইউটিউবের কয়েকটি ভুয়ো ভিডিওর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সব্যসাচী।এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন ‘আমার আজকাল কিছুই লিখতে ইচ্ছা করে না, কিন্তু আজ কিছু মানুষের বর্বরতার নমুনা দেখে লিখতে বাধ্য হলাম। ইউটিউবের কল্যাণে কয়েকটা ভুয়ো ভিডিও আর ফেক্ থাম্বনেল বানিয়ে পয়সা রোজগার করা অত্যন্ত ঘৃণ্য মানসিকতার কাজ বলে আমি মনে করি, সেটা যে ওর বাড়ির লোকের মনে কেমন প্রভাব ফেলে তা হয়তো আপনারা বুঝবেন না। আমার চোখে ওর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেনি, অবনতি ঘটেছে মানবিকতার’।
শেষে সব্যসাচীর সংযোজন ‘ভালো আছে’ বলতে আমার ভয় লাগে, কিন্তু ঐন্দ্রিলা আছে। প্রচন্ডভাবে আছে। আমার সামনে শুয়ে থেকেও হয়তো কয়েক সহস্র মাইল দূরে আছে কিন্তু ঠিক ফিরে আসবে। ওর একা থাকতে বিরক্ত লাগে’।