মাত্র ৩ বছরের অভিনয় জীবনে বাংলা বিনোদন জগতের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী হয়ে উঠেছেন অরিজিতা মুখোপাধ্যায় (Arijita Mukhopadhyay)। বেশিরভাগ ধারাবাহিকেই দাপুটে খলনায়িকার চরিত্রেই অভিনয় করেন তিনি। প্রথম সিরিয়াল ‘আয় খুকু আয়’ থেকে শুরু করে এখনকার ‘মিঠাই’ সিরিয়ালে ওয়ান অ্যান্ড অনলি প্রমীলা লাহা সবেতেই রয়েছে নেগেটিভ শেড। অভিনেত্রী জানিয়েছেন তাঁর নিজেরও এই ধরণের চরিত্র করতে খুবই ভাল লাগে।
তবে শুধু বাংলা সিরিয়াল নয় এই অভিনেত্রীর অবাধ যাতায়াত রয়েছে মঞ্চ নাটক থেকে শুরু করে সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজের দুনিয়াতে। অনেকেই হয়তো জানেন না বিনোদন জগতের এই দাপুটে অভিনেত্রী পেশায় অভিনেত্রী হলেও তিনি কিন্তু দারুন শিক্ষিত। একটা সময় ইংল্যান্ডে থিয়েটারে প্রশিক্ষক হয়ে কাটিয়েছিলেন টানা একটা বছর। দেশে ফিরে তা নিয়ে শুরু করেছিলেন গবেষণা। কিন্তু সব ছেড়ে শেষ মেষ রোজগারের প্রয়োজনে অভিনয় টাকেই পেশা করে নিয়েছিলেন অরিজিতা।
জানা যায় শান্তিনিকেতনের বেড়ে ওঠার পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেছিলেন পর্দার এই জনপ্রিয় খলনায়িকা। ছোটবেলা থেকে মঞ্চ অভিনয় তার ভীষণ প্রিয় হলেও ইদানিং টেলিভিশনের দৌলতে সম্পূর্ণ অচেনা দর্শক গোষ্ঠীর জন্য কাজ করার বিষয়টিও তিনি চুটিয়ে উপভোগ করছেন। সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন প্রতি সপ্তাহের টিআরপি রেজাল্টের দিন ভয়ে ভয়ে তার বুক কাঁপে।
টেলিভিশনের পর্দায় কাকিমা জেঠিমা কিংবা ক্ষমতাশালী নারী চরিত্রের পাশাপাশি গ্যাংস্টার চরিত্রেও দেখা গিয়েছেঅরিজিতাকে। অভিনেত্রীর ঝুলিতে রয়েছে ‘সম্পূর্ণা’, ‘ইন্দু’, ওয়েব সিরিজ কিংবা ‘কুলের আচার’-এর মতো সিনেমা। প্রত্যেকটা চরিত্রেই নিজের সাবলীল অভিনয় ফুটিয়ে তুলেছিলেন সহজেই। রূপালী পর্দায় সৃজিত মুখার্জির ‘এক্সপ্রেম’-এর হাত ধরে প্রথম বড় পর্দায় পা রেখেছিলেন অরিজিতা। কিছুদিন আগেই অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ‘ফাটাফাটি’ সিনেমায় কাজ করেছেন অরিজিতা।
প্রসঙ্গত অরিজিতা কোন দিনই তথাকথিত সুন্দরী অভিনেত্রীদের মধ্যে পড়েন না।এছাড়াও নিজের ভারি চেহারার কারণে বহুবার অসংখ্য মানুষের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। ইন্ডাস্ট্রিতেও কথা শোনানো হয়েছিল একসময়। শুধুমাত্র যথেষ্ট ভালো দেখতে নয় এই বলে বেশ কিছু কাজ থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সহকর্মী থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির অনেকেরই বডিশেমিং এর মুখে পড়েছিলেন অভিনেত্রী।
অভিনেত্রীর কথায় ‘যেন আমি একটা মাংসের তাল! আর কোন অস্তিত্ব নেই! সেখান থেকে প্রমাণ করতে হয়েছে অভিনয়টা পারি’। তবে সেইসাথে অভিনেত্রী জানিয়েছেন চরিত্রের প্রয়োজনে তিনি যে কোনদিনও রোগা হবেন না এমনটা কিন্তু নয়। এখনও তিনি সেটা করেননি কারণ এখনও তার প্রয়োজন হয়নি। তাছাড়া অভিনেত্রী নিজেও মনে করেন চেহারার মাপ কোনদিনই স্বপ্নের ব্যাপ্তিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না। মানুষ যদি সৎ ভাবে পরিশ্রম করে,তাহলে সে লক্ষ্যে পৌঁছাবেই।