টেলিভিশনের ইতিহাসে ‘রামায়ণ’ এর (Ramayan) গল্পের ওপর ভিত্তি করে বহু সিরিয়াল তৈরি হয়েছে। কিন্তু রামানন্দ সাগরের (Ramanand Sagar) সিরিয়ালের মতো জনপ্রিয় কোনোটি হয়নি। সুপারহিট সেই ধারাবাহিকে শ্রীরাম এবং মাতা সীতার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যথাক্রমে অরুণ গোভিল এবং দীপিকা চিখলিয়া। রাবণ এবং লক্ষ্মণের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল অরবিন্দ ত্রিবেদী এবং সুনীল লহরীকে।
সেই সময় ‘রামায়ণ’এর জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি ছিল যে এখনও অরুণ, দীপিকাদের সেই চরিত্র হিসেবেই মনে রেখেছেন দর্শকরা। জানিয়ে রাখি, ধার্মিক এই সিরিয়াল তৈরির পিছনে নিজেদের সবটুকু দিয়ে দিয়েছিলেন নির্মাতারা। প্রত্যেকটি এপিসোড যাতে দর্শকদের ভালোলাগে সেই জন্য জলের মতো টাকা খরচ করেছিলেন তাঁরা।
বিভিন্ন নামী সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেই সময় দাঁড়িয়ে ‘রামায়ণ’এর প্রত্যেক এপিসোড তৈরির জন্য নির্মাতারা ৯ লাখ টাকা খরচ করতেন। আর সেখান থেকে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে তো এখনও অনায়াসে একটি বলিউড সিনেমা তৈরি করে ফেলা যায়!
শোনা যায়, ‘রামায়ণ’এর একটিমাত্র এপিসোড তৈরি করতেই নির্মাতারা যেমন ৯ লাখ টাকা খরচ করতেন, তেমনই ঘরে তুলতেন প্রায় ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিনিয়োগের ৪ গুণেরও বেশি টাকা আয় হতো তাঁদের। জানা যায়, ৩৫ মিনিট সময়ের ৭৮টি এপিসোডের সম্পূর্ণ আয়কে যদি যোগ করা হয় তাহলে নির্মাতারা ৩০ কোটির এক বিশাল অঙ্ক ঘরে তুলেছিলেন।
জানিয়ে রাখি ১৯৮৭ সালে সম্প্রচারিত ‘রামায়ণ’এর প্রত্যেকটি এপিসোডকে দর্শকরা দু’হাত ভরে ভালোবাসা দিয়েছেন। শোনা যায়, সেই সময় নাকি যখন ‘রামায়ণ’ সম্প্রচার হতো তখন সবাই নিজেদের কাজ ছেড়ে সেই ধারাবাহিক দেখতে বসে পড়তেন। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা হয়ে যেত। ভারত ছাড়াও আরও ৫৫টি দেশে সম্প্রচারিত হতো রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’। সেই সময় দাঁড়িয়েই ৬৫০ মিলিয়ন মানুষ এই ধারাবাহিকটি দেখেছেন। এই ধারাবাহিকের নাম সেই সময় সবচেয়ে বেশি দেখা ধার্মিক সিরিয়ালের বিভাগে ‘লিমকা বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’এ ছিল।
অবশ্য শুধুমাত্র ১৯৮৭ সালেই নয়, করোনা অতিমারীর সময়ও ফের একবার টেলিভিশনের পর্দায় ‘রামায়ণ’ দেখানো শুরু হয়েছিল। সেই সময়ও দর্শকরা এই শো’টিকে দু’হাত ভরে ভালোবাসা দিয়েছিলেন। জানা যায়, লকডাউনের সময় প্রায় ৭.৭ কোটি দর্শক ‘রামায়ণ’ দেখেছিলেন।