সাধারণ অভিনেতা থেকে ‘সুপারস্টার’ হয়ে ওঠার পিছনে থাকে অনেকটা লড়াই, অনেকটা পরিশ্রম। দর্শকরা শুধুমাত্র সাফল্যটা দেখতে পান, অজানা থেকে যায় নেপথ্যের সংগ্রাম। ঠিক যেমন, অনুরাগীরা অমিতাভ বচ্চনের (Amitabh Bachchan) খ্যাতি, যশ দেখেন। কিন্তু তিনি এই স্থানে পৌঁছনোর জন্য কতখানি পরিশ্রম, আত্মত্যাগ করেছেন তা হয়তো জানেন না। আজ বলি সুপারস্টারের ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর কেরিয়ারের সেরা সিনেমাগুলির হদিশ দেওয়া হল, যা বদলে দিয়েছিল তাঁর কেরিয়ার।
‘জঞ্জির’ (Zanjeer) : সংবাদপাঠক হিসেবে রিজেক্ট হওয়ার পর বলিউড অভিনেতা হিসেবে কেরিয়ার শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অমিতাভ। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ১৯৬৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘ভুবন সোম’ দিয়ে। বহু ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের পর মুখ্য চরিত্রে কাজের সুযোগ পান বিগ বি। তবে তাঁর কেরিয়ার বদলে দিয়েছিল যে ছবি তা হল ১৯৭৩ সালে রিলিজ হওয়া ‘জঞ্জির’। এই ছবির হাত ধরেই বলিউডেও শুরু হয়েছিল ‘অ্যাংরি ইয়াং ম্যান’ যুগের।
‘দিওয়ার’, ‘শোলে’, ‘ডন’ (Deewarm Sholay, Don) : বলিউডের ইতিহাসের সবচেয়ে আইকনিক ছবির তালিকা প্রস্তুত করা হলে সেখানে নিঃসন্দেহে নাম থাকবে ‘দিওয়ার’ এবং ‘শোলে’র। এই দুই ব্লকবাস্টার ছবির হাত ধরে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন অমিতাভ। এখনও দর্শকদের একটি বড় অংশের অত্যন্ত পছন্দের সিনেমা এটি।
অপরদিকে ‘ডন’এর হাত ধরে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসের আইকনে পরিণত হয়েছিলেন অমিতাভ। এই ছবিটি এতটাই হিট হয়েছিল যে পরিবর্তীকালে এর রিমেকও এসেছে। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে ‘ডন’এ অমিতাভ যা অ্যাকশন করেছিলেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। পাশাপাশি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের দ্বৈত চরিত্রে অভিনয়ের চ্যালেঞ্জ তো ছিলই।
‘সিলসিলা’ (Silsila) : শুধুমাত্র অ্যাংরি ইয়াং ম্যান হিসেবেই নয়, রোম্যান্টিক নায়ক হিসেবেও দর্শকদের মন জয় করেছেন বিগ বি। যশ রাজ ফিল্মসের ‘সিলসিলা’ ছবিতে দর্শকরা সাক্ষী থেকেছেন প্রেমিক অমিতাভের। রেখা এবং জয়া বচ্চনের সঙ্গে তাঁর রসায়ন দারুণ পছন্দ হয়েছিল দর্শকদের। জানিয়ে রাখি, এই ছবির হাত ধরেই কিন্তু পথচলা শুরু হয়েছিল অমিতাভ-যশ রাজ জুটির।
‘কুলি’, ‘শেহেনশাহ’, ‘অগ্নিপথ’ (Coolie, Shahenshah, Agneepath) : ‘কুলি’ ছবির অ্যাকশন দৃশ্যের শ্যুটিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন অমিতাভ। সেই সময় তাঁর অনুরাগীরা অভিনেতাকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। যদিও রিলিজের পর বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল সেই ছবি।
অপরদিকে ‘শেহেনশাহ’ ছবির হাত ধরেই ‘বলিউডের শেহেনশাহ’ খেতাব আদায় করেছিলেন বিগ বি। এই ছবির হাত ধরে কামব্যাক করেছিলেন তিনি এবং বক্স অফিসে দারুণ সফল হয়েছিল ‘শেহেনশাহ’। ‘অগ্নিপথ’ ছবিতে আবার নিজের অ্যাংরি ইয়াং ম্যান অবতার দেখিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন তিনি।
‘পিঙ্ক’, ‘পিকু’ (Pink, Piku) : বলিউড থেকে কিছুটা সময় বিরতি নেওয়ার পর ‘বাগবান’, ‘কভি খুশি কভি গম’এর মতো ছবির হাত ধরে কামব্যাক করেছিলেন অমিতাভ। বক্স অফিসে দারুণ সফল হয়েছিল এই ছবিগুলি।
এছাড়াও অমিতাভ অভিনীত ‘সরকার’ ট্রিলজি থেকে শুরু করে হালফিলের ‘পিঙ্ক’, ‘পিকু’, ‘১০২ নট আউট’ও বক্স অফিসে ভালো ব্যবসা করেছে। নিজের কাজের মাধ্যমেই রোজ বিগ বি প্রমাণ করেছেন কেন তিনি এই বয়সেও বলিউডের ‘শেহেনশাহ’।