বলিউডের শিল্পীদের সাফল্যটাই সকলে দেখেন, কেউ সেই সাফল্যের নেপথ্যের সংঘর্ষের কথা জানেন না। এমনই একটি কাহিনী হল বলিপাড়ার জনপ্রিয় গায়ক উদিত নারায়ণের (Udit Narayan)। আজকের প্রতিবেদনে নব্বইয়ের দশকের বহু সুপারহিট গান গাওয়া এই গায়কের সংগ্রামের অজানা কাহিনী (Struggle story) তুলে ধরা হল।
১৯৯৫ সালে ১ ডিসেম্বর বিহারে জন্ম উদিতের। গায়কের পুরো নাম উদিত নারায়ণ ঝা। আজ হয়তো গায়কের কোনও পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। কিন্তু এমন একটা সময়ও ছিল যখন নিজের পেট চালানোর জন্য হোটেলেও গান করেছেন তিনি।
১৯৭০ সালে নেপালের রেডিওয় লোক শিল্পী হিসেবে কেরিয়ার শুরু হয়েছিল উদিতের। নেপালি ছবি ‘সিঁদুর’এর মাধ্যমে ফিল্মি দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন গায়ক। তবে সেই ছবিতে গান গেয়ে খুব একটা পরিচয় তিনি পাননি। নিজের কেরিয়ারের শুরুতে প্রায় ১০ বছর কঠোর সংঘর্ষ করেছেন উদিত। ছোটখাটো অনুষ্ঠানে গান গাওয়া থেকে শুরু করে হোটেলে গান গাওয়া, অনেক ধরণের কাজ করেছেন তিনি।
তবে উদিতের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল একটি ভোজপুরী গান। সেই ছবির গান গাওয়ার সময়ই তাঁর দেখা গিয়েছিল আনন্দ-মিলিন্দের সঙ্গে। তাঁর গলা শুনেই একেবারে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এরপর ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’ ছবিতে সুপারহিট ‘পাপা কেহতে হ্যায়’ গান গাওয়ার সঙ্গেই রাতারাতি তারকা হয়ে যান তিনি। এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
যদিও কেরিয়ারে সফল হলেও, একবার আত্মঘাতী হওয়ার কথাও ভেবেছিলেন বলিপাড়ার এই নামী গায়ক। জানা যায়, করণ জোহরের ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’তে গান গাওয়ার পর ফের একবার উদিতের কেরিয়ার রমরিমিয়ে চলতে শুরু করেছিল। কিন্তু সেই সময়ই একের পর এক ধমকি দেওয়া ফোন পাওয়া শুরু করেন গায়ক।
উদিত একবার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ১৯৯৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই ফোনগুলি আসত। গায়ক বলেন, কেউ হয়তো তাঁকে মেরে ফেলার জন্য সুপারি দিয়েছিলেন। আর সেই জন্য তিনি এতটাই চাপে পড়ে গিয়েছিলেন যে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা অবধি ভেবেছিলেন।
অবশ্য উদিতের কেরিয়ারই শুধু নয়, বহুবার চর্চার কেন্দ্রে চলে এসেছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও। গায়কের প্রথম বিয়ে হয়েছিল রঞ্জনা নারায়ণ ঝায়ের সঙ্গে। সেই বিয়ে ভাঙার পর দীপা নারায়ণের সঙ্গে সাত পাক ঘোরেন তিনি। তবে একবার নিজের প্রথম বিয়ে অস্বীকার করার জেরে চরম বিপাকে পড়েছিলেন উদিত। রঞ্জনা কোর্টে গিয়ে তাঁদের বিয়ের ছবি দেখিয়ে দেওয়ার পরই গায়ককে সবকিছু স্বীকার করে নিতে হয়েছিল।