বলিউডে এমন বহু অভিনেতা রয়েছেন যারা নায়ক কিংবা ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় না করেই দর্শকদের মনে একটি বিশেষ স্থান আদায় করে নিয়েছেন। এমনই একজন অভিনেতা হলেন জনি লিভার (Johnny Lever)। বলিউডের ‘কমেডি কিং’ হিসেবে পরিচিত এই অভিনেতা এখনও পর্যন্ত নিজের কেরিয়ারে ৩০০’রও বেশি ছবিতে কাজ করে ফেলেছেন। তবে এখন বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেতা হলেও, তাঁর কমেডিয়ান হওয়ার লড়াইটা (Struggle) কিন্তু একেবারেই সহজ ছিল না।
জনির জন্ম হয়েছিল এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। অভিনেতার দুই ভাই এবং তিন বোন রয়েছে। এত বড় পরিবারে অভাব ছিল প্রায় নিত্যসঙ্গী। সেই কারণে বাধ্য হয়ে পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছিল জনিকে। সংসার চালানোর জন্য রাস্তায় রাস্তায় পেন বিক্রি করতেন তিনি। তাঁর মিশুকে স্বভাবের জন্য বিক্রিও ভালোই হতো।
তবে জনি স্বপ্ন দেখতেন অভিনেতা হওয়ার। যদিও সংসারের অভাবের কারণে সেই দিকে তখনও পা বাড়াতে পারেননি তিনি। অনেক কম অনুরাগীই হয়তো জানেন, জনির আসল নাম জন প্রকাশ রাও জনুমালা। তবে পেন বিক্রির কাজ ছাড়িয়ে জনির পিতা তাঁকে হিন্দুস্তান ইউনিলিভার কোম্পানিতে কাজের ব্যবস্থা করে দেন। তখনই তাঁর নাম হয়ে ওঠে ‘জনি লিভার’।
পেন বিক্রি থেকে শুরু করে হিন্দুস্তান ইউনিলিভারে কাজ করা- বলিউডে পা রাখার আগে নানান ধরণের কাজ করেছেন জনি। চিরকাল কমেডিয়ান হওয়ার স্বপ্ন পোষণ করা এই অভিনেতা কেরিয়ারের শুরুতে স্ট্যান্ড আপ কমেডিও করেছেন। সেই সময়ই তিনি সুনীল দত্তের নজরে পড়েন। হীরের টুকরো এই অভিনেতাকে চিনতে পেরে তিনি ‘দর্দ কা রিশ্তা’ ছবিতে তাঁকে কাজ দেন। এরপরই বদলে যায় জনির জীবন।
ডেবিউ ছবিতে নজরকাড়ার অভিনয় করার পর জনির কাছে একাধিক ছবির অফার আসতে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত বলিউডের ইতিহাসের বহু সুপারহিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ‘রাজা হিন্দুস্তানি’ থেকে ‘চালবাজ’, ‘বাজিগর’ থেকে ‘আন্টি নম্বর ওয়ান’- জনির ঝুলিতে রয়েছে একাধিক ব্লকবাস্টার সিনেমা। তবে অভিনেতা হওয়ার পরেও কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে বেশ কয়েক বার কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে হয়েছে তাঁকে।
জনি একবার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সিনেমার শ্যুটিং থাকার কারণে তাঁকে নিজের অসুস্থ পিতাকে হাসপাতালে এক ফেলে চলে যেতে হয়েছিল। তাঁর পিতার পায়ের অপারেশন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু অভিনেতাকে কাজে চলে যেতে হয়। বুকে সেই কষ্ট নিয়েই এক কমেডি দৃশ্যের শ্যুটিং করেছিলেন জনি। সেই কষ্ট এখনও অভিনেতার মনে রয়ে গিয়েছে।