বাংলা বিনোদন জগতের দুই বিখ্যাত দম্পতি হলেন অভিনেতা দেবরাজ রায় (Debraj Roy) এবং তার স্ত্রী অনুরাধা রায় (Anuradha Roy)। অভিনয় জগতের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্ত রয়েছেন এই দুই অভিনেতা। দেবরাজ রায়ের বাড়িতে শুরু থেকেই ছিল অভিনয়ের পরিবেশ। তার মা এবং বাবা দুজনেই ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রী।
সেই সূত্র ধরেই তাঁরও অভিনয় জগতে আসা। তিনি হলেন সেই সৌভাগ্যবান অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম যাঁর কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ হয়েছিল। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ সিনেমা দিয়েই অভিনয় জগতে প্রথম হাতেখড়ি হয় এই অভিনেতার। তবে শুধু অভিনয় নয় বহুমুখী প্রতিভার অধিককারী দেবরাজ রায় আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে দূরদর্শন, নাটক এবং রেডিওতেও অত্যন্ত পরিচিত একজন মুখ হয়ে উঠেছিলেন।
অন্যদিকে অভিনেতার স্ত্রী তথা অভিনেত্রী অনুরাধা রায়ের বাড়িতেও ছিল ছোট থেকে নাচ, গান আর অভিনয়ের পরিবেশ। অভিনেত্রীর মা-বাবা দুজনেই ছিলেন এই পেশার সাথে যুক্ত। তবে বিয়ের পরেই প্রথম অভিনয়ের হাতেখড়ি হয় অনুরাধা রায়ের। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির জোরাজুরিতেই অভিনয়ের আসা তাঁর।সেই শুরু, সেই থেকে আজও বাংলা সিনেমা থেকে শুরু করে সিরিয়াল দাপটের সাথে অভিনয় করে চলেছেন তিনি।
তবে এখন আর পর্দায় দেখা যায় না দেবরাজ রায়েকে।এক সাক্ষাৎকারে এর কারণ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী তথা দেবরাজ রায়ের স্ত্রী অনুরাধা রায়। জানা যায় ২০১৭ সালে দেবরাজ রায়ের ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল। সেই সময় তাঁর বিরাট ক্ষতি না হলেও অভিনেতা শরীরের ডান দিকটা অসার হয়ে পড়েছিল। তারপর তিনি ধীরে ধীরে অভিনয় জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেন।
কারণ তারপর থেকে তার অভিনয়ে ফেরার ইচ্ছাটাই নাকি সম্পূর্ণভাবে চলে গিয়েছিল। তবে অভিনয় বন্ধ রাখলেও ছোটখাটো অনুষ্ঠানে যাওয়া কিংবা টেলিফোনে ইন্টারভিউ দেওয়া এই ধরনের কাজ মাঝেমধ্যেই করে থাকেন তিনি। একটা সময় স্ত্রী অনুরাধা রায়ের সাথেও তিনি অভিনয় করেছেন বেশ কয়েকটি সিনেমায়। তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘দেবর’, ‘করোটি’, ‘চৌধুরী পরিবার’ ইত্যাদি।
আর এখন তাদের স্বামী স্ত্রীর দুজনের জীবন বইছে দুই খাতে। একদিকে স্ত্রী অনুরাধা রায় এখনও এই বয়সেও দাপিয়ে কাজ করে চলেছেন বাংলা সিনেমা থেকে সিরিয়াল উভয় ইন্ডাস্ট্রিতেই। আর অন্যদিকে অসুস্থতার কারণে এখন নিজেকে অভিনয় থেকে সরিয়ে নেওয়ায় দেবরাজ রায়ের দিন কাটে খবরের কাগজ কিংবা গল্পের বই পড়ে। তবে এই নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে কখনোই মনোমালিন্য বা মান অভিমান তৈরী হয়নি বলেই জানা যায়।