জীবনের সুখ-দুঃখ কিংবা প্রেম বিরহ সবেতেই ওষুধের মতো কাজ করে অরিজিৎ সিং (Arijit Singh)-এর গান।আর বাংলা হোক কিংবা হিন্দি নিজের সুরের জাদুতে দিনের পর দিন অসংখ্য শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন অরিজিৎ সিং। আজকের দিনে গোটা দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে অরিজিৎ সিং শুধু একটা নাম নয়, একটা গোটা জাতির ইমোশন।
একেবারে শান্তশিষ্ট স্বভাবের সাদামাটা এই মানুষটির গানের গলার মতই আকর্ষণীয় তাঁর ব্যক্তিত্ব। আজ দেশের অন্যতম সেরা গায়ক অরিজিৎ। আর তারপরেও খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেও অহংকার শব্দটা আজ পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি তাঁকে, এতটাই সাধারণ তিনি। ইতিপূর্বে আমরা একাধিকবার দেখেছি অরিজিৎ সিংয়ের সাদামাটা জীবন যাপনের একাধিক উদাহরণ।
তা সে মুম্বাইয়ের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো নিজের ছেলেকে জিয়াগঞ্জের স্কুলে ভর্তি করাই হোক কিংবা স্ত্রীকে নিয়ে স্কুটিতে চেপে ঘুরতে বেরোনো হোক সবেতেই রয়েছে অরিজিৎ সিংয়ের সাদামাটা জীবন যাপনের ছাপ। তাই অরিজিৎ সিং এমন একজন গায়ক যার সাথে দেখা করা যে কোন ভক্তের কাছে স্বপ্নের মত।
এবার নিজের সেই স্বপ্ন সত্যি করে তুলতে গিয়েই শিরোনামে উঠে এলেন মধ্যমগ্রামের গঙ্গানগর এলাকার বাসিন্দা দীপ কুমার। তার কাছে গায়ক অরিজিৎ সিং হলেন ভগবানের মতো। উপহার সামগ্রির দোকান চালিয়েই সংসার চলে তার। সেইসাথে মাঝে মধ্যেই গানের চর্চাও করে থাকেন তিনি। সেই থেকেই তার বহুদিনের স্বপ্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়ক অরিজিৎ সিং এর সঙ্গে দেখা করার। তাই ঈশ্বরদর্শন এর জন্য বাড়ি থেকে খালি পায়ে হেঁটেই জিয়াগঞ্জে পাড়ি দিয়েছিলেন দীপ।
জানা যাচ্ছে ২৬ জুলাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে জিয়াগঞ্জ-এর উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়ে সাত দিনে ২২০ কিমি রাস্তা পেরিয়ে গত সোমবারই জিয়াগঞ্জে পৌঁছেছিলেন দীপ। সেখানেই শ্রীপত সিং এলাকায় বুকে অরিজিৎ সিং এর নাম লেখা প্লাকার্ড ঝুলিয়েই তাকে ঘুরতে দেখেছিলেন ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষাল। এরপর দীপকে থানায় নিয়ে গিয়ে ওসি তার থেকে সমস্ত বিষয়টা জেনে নিজেই ফোন করে থানায় ডেকে আনেন অরিজিৎ সিংকে।
এরপরেই স্বপ্ন পূরণ হয় দীপের। তারপরেই চোখের সামনে সাক্ষাৎ ভগবান রুপি অরিজিৎ সিংকে দেখার পর থানার পাশে পাঁকুড়গাছের তলায় এই দীপের সাথে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে আড্ডা চলে অরিজিৎ সিং এর। সেই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মধ্যমগ্রামের দীপ বলেছেন ভক্ত যেমন দেবদর্শনে পায়ে হেটে যাত্রা করে তেমনি তিনিও মধ্যমগ্রাম থেকে খালি পায়ে হেঁটে অরিজিৎ সিং এর সঙ্গে দেখা করতে জিয়াগঞ্জ এসেছিলেন। ওনার সঙ্গে আড্ডা দিয়ে দীপের মনে হয়েছে উনি অত্যন্ত বড় মাপের একজন শিল্পী তার চেয়ে বড় হৃদয়ের একজন মানুষ।